ইন্দোনেশিয়ান তরুণীকে ব্ল্যাকমেইল, বাংলাদেশি তরুণ পুলিশের কব্জায়

হ্যাকার আবুল হোসেনবন্ধুত্বের ফাঁদে ফেলে ইন্দোনেশিয়ান এক তরুণীর ফেসবুক ও ইনস্ট্যাগ্রাম আইডি হ্যাক করেছিল বাংলাদেশি এক তরুণ। এরপর চলতে থাকে নিয়মিত ব্ল্যাকমেইল। অর্থ দাবি থেকে শুরু করে অশ্লীল প্রস্তাবও দিয়ে আসছিল ওই তরুণ। উপায় না পেয়ে ওই তরুণী যোগাযোগ করে বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের সঙ্গে। সাইবার ক্রাইমের কর্মকর্তারা বাংলাদেশি ওই তরুণকে শনাক্ত করে ইন্দোনেশিয়ান ওই তরুণীর হ্যাক করা ফেসবুক ও ইনস্ট্যাগ্রাম আইডিটি ফেরত দিয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সাইবার ক্রাইম বিভাগের সহকারী কমিশনার ধ্রুব জোতির্ময় গোপ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'আমরা ইন্দোনেশিয়ান তরুণীর হ্যাক হওয়া ফেসবুক ও ইনস্ট্যাগ্রাম আইডি উদ্ধার করেছি। হ্যাকারকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’

সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি শায়লা নামে ইন্দোনেশিয়ার এক তরুণী তাদের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তার আইডি হ্যাক ও ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করে। পরে সাইবার ক্রাইম বিভাগের পক্ষ থেকে ওই তরুণীর সঙ্গে ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। ওই তরুণীর অভিযোগ, বছর খানেক আগে বাংলাদেশের এক তরুণের সঙ্গে তার ও তার ছোট বোনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে ওই তরুণ তার ও তার বোনের ফেসবুক ও ইনস্ট্যাগ্রাম আইডি হ্যাক করে। এরপর থেকে সে নিয়মিত তাদের দুই বোনকে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল। অর্থ দাবির পাশাপাশি হ্যাকার তাদের অশ্লীল প্রস্তাবও দেয়।

সাইবার ক্রাইম সূত্র জানায়, বিষয়টি আমলে নিয়ে সাইবার ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) সাঈদ নাসিরুল্লাহর একটি টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ওই হ্যাকারকে শনাক্ত করে। বাংলাদেশের হবিগঞ্জের বাসিন্দা আবুল হোসেন নামে এক তরুণ ইন্দোনেশিয়ান ওই তরুণীর ফেসবুক ও ইনস্ট্যাগ্রাম আইডি হ্যাক করেছিল। পরে আবুলের কাছ থেকে শায়লা ও তার বোনের ফেসবুক ও ইনস্ট্যাগ্রাম আইডি উদ্ধারের পর আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

সাইবার পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের অনেক তরুণ শখের বসে হ্যাকিং শিখে তা অপব্যবহার করছে। কেউ কেউ রীতিমতো হ্যাকিংকে ‘পেশা’ হিসেবে নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করছে। গত এক বছরে শতাধিক হ্যাকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তা ধ্রুব জোতির্ময় গোপ জানান, বাংলাদেশের ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী, কারও আইডি হ্যাক করা দণ্ডণীয় অপরাধ। এই আইনে হ্যাকারের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ কোটি টাকা অর্থ দণ্ডের বিধান রয়েছে। এ জন্য শখের বসে হ্যাকিং শিখে, এর অপপ্রয়োগ করলে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।