ঢাবি শিক্ষার্থীর সুইসাইড নোটসহ সব বিষয়ে তদন্ত চলছে: পুলিশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আদনান সাকিব রাব্বি (২৫) আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তবে এর পেছনে অন্য কোনও কারণ লুকিয়ে আছে কিনা তা সামনে রেখে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় একটি আবাসিক হোটেল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃতদেহের পাশ থেকে বেশকিছু আলামত পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। একমিনিট যেন মনে হয় বছর। আমার স্ত্রী একজন ভালো শুদ্ধ মানুষ।’

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে জানা যাবে।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সব বিষয় মাথায় রেখে এই ঘটনা তদন্ত করছি। তবে প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই আমাদের ধারণা। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে আমরা ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে জানতে পারবো। সুইসাইড নোট তার হাতের লেখা কিনা নিশ্চিত হতে ফরেনসিকের জন্য পাঠাবো।’

ঢাবি’র আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আদনান সাকিব রাব্বি সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে থাকতেন। হোটেলের রেজিস্টার খাতার তথ্যানুযায়ী, গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় একটি রুম ভাড়া নেন তিনি। সেগুনবাগিচার ওই হোটেলে ওঠার প্রকৃত কারণ, কারও সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব কিংবা পারিবারিক কোনও বিষয় জড়িত রয়েছে কিনা সবকিছু সামনে রেখে তদন্ত করছে পুলিশ।

আদনান সাকিব রাব্বিকে না পেয়ে গতকাল (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার স্ত্রী নুসরাত আফরিন। প্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানীর সেগুনবাগিচার কর্ণফুলী আবাসিক হোটেলের ১০৭ নম্বর কক্ষ থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় এই তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়।

বন্ধুদের বরাত দিয়ে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলাশ সাহা উল্লেখ করেন, দীর্ঘ ১১ বছর ধরে মানসিক সমস্যার কারণে আদনান সাকিব রাব্বির কোনও কিছু মনে থাকতো না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আদনান সাকিব রাব্বির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার বড় ভাই বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এর কারণ অনুসন্ধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বাত্মক সহায়তা কামনা করেন তিনি। এছাড়া পরিবারের সদস্য ছাড়াও বন্ধুদের কোনও বিষয়ে জানা থাকলে তা পুলিশকে জানানোর অনুরোধ জানান প্রক্টর।