মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডিতে জমে উঠেছে ইফতার বাজার

সারাদিন রোজা রেখে সবাই একটু ভালো খেতে পছন্দ করেন। এজন্য ইফতারের আয়োজনে থাকে নানা পদের খাবার। আর সব খাবার বাসায় তৈরি করা সম্ভব হয় না বলে ঘরের বাইরে থেকে ইফতার কেনায় ব্যস্ত দেখা যায় রোজাদারদের। রাজধানীর সব এলাকাতে মাগরিবের আজানের আগে এ চিত্র দেখা যায়। বরাবরের মতো রাজধানীর আর সব এলাকার মতো ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় জমে উঠেছে ইফতার বাজার। বুধবার মোহাম্মদপুর এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও বিহারি ক্যাম্প এলাকায় ইফতারের আয়োজন জমে উঠেছে। এখানকার স্পেশাল চাপের পাশাপাশি ইফতারের জন্য ছোলা-মুড়ি, হালিম, কাবাব ও আস্ত মুরগির রোস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিহারি ক্যাম্পের মুসলিম চাপের বিক্রয়কর্মী মো.আবদুল জানান, ‘রোজা উপলক্ষে আমাদের স্পেশাল আইটেম চাপ, কাবাব ও মগজ ছাড়া ইফতারির জন্য হালিম ও অন্যান্য ইফতারের নিয়মিত আইটেম বিক্রি করছি।’ প্রতি বাটি হালিম ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৫’শ টাকা পর্যন্ত আছে বলে জানালেন এই বিক্রয়কর্মী। ধানমন্ডিতে ইফতার কিনছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী কামরুন নাহার। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ইফতারে একই খাবার খেতে খেতে একঘেয়েমি চলে এসেছে স্বাদে। তাই আজকে নিয়মিত আইটেমের পাশাপাশি দুএকটি বাড়তি আইটেম কিনতে এসেছি। আজকে চিকেন চাপ ও হালিম দিয়ে ইফতার করবো।’

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ইফতার বাজার
মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক, আদাবর, মোহাম্মদপুর কৃষি বাজার, জাপান গার্ডেন সিটির পাশে টোকিও স্কয়ার, প্রিন্স বাজার ও কয়েকটি রেস্টুরেন্টে ইফতারের ব্যাপক আয়োজন রয়েছে। এখানের রাস্তার ধারে রোজা উপলক্ষে ছোট ছোট অনেক ইফতার বিক্রি করার দোকান দেখা গেছে। এসব এলাকার স্থানীয়রা এখনও ইফতারের সঙ্গে ঘুঘনি মাখিয়ে খেতে পছন্দ করেন। এদিকে, ধানমণ্ডি এলাকায় রাস্তার পাশের ফুটপাতের দোকানের সংখ্যা মোহাম্মদপুরের তুলনায় একেবারেই কম। এখানে রেস্টুরেন্টগুলোতে ইফতারের যথেষ্ট ভালো আয়োজন রয়েছে। ধানমন্ডির ১৯ নম্বরে জে আর প্লাজাতে অন্তত ৮ থেকে ১০টি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। প্রতিটি রেস্টুরেন্টেই ইফতারের বিশেষ আয়োজন রয়েছে। তবে যারা একটু ভিন্ন কিছু খেতে চান, তাদের জন্য রাস্তার ওপারেই রয়েছে ধাবা রেন্টুরেন্টের আচারি আলু, আলু পরাটা ও দই বড়া।

চইঝাল রেস্টুরেন্টের বিশেষ আইটেম

ধানমন্ডির ৪/এ-তে বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্টে ইফতার উপলক্ষে পাওয়া যাচ্ছে আস্ত মুরগির রোস্ট, দই বড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের কাবাব ও ইফতারের নিয়মিত আইটেম। জিগাতলার বাবুর্চি রেস্টুরেন্টে ছাগলের আস্ত রান দিয়ে বিশেষ একটি পদ বিক্রি করতে দেখা গেল। দাম ৮০০ টাকা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউল্যাবের শিক্ষার্থী তামিম জানান, অন্যান্য দোকানের তুলনায় এসব খাবাবের মান অনেক ভালো তাই এখানে তারা দল বেধে খেতে এসেছেন।

রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকায় ইফতার বাজার
চইঝাল রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখা গেল ভিড় উপচে পড়ছে রোজাদারদের। বিক্রয়কর্মী সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুলনার একটি স্পেশাল খাসির পদ বিক্রি করছেন তারা। এই রান্নায় কয়েকটি মাংসের টুকরায় অন্তত ১০ থেকে ১৫টি রসুন দেওয়া হয়েছে। বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ১৫০ টাকা করে। অন্যদিকে, ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ারের নিচের ফুড ভ্যানগুলোতে ইফতার উপলক্ষে অনেক আয়োজন করা হয়েছে। ইফতারের আগে এখানে যারা শপিং করতে আসেন তারা এখানেই ইফতার সেরে নিতে পারেন। সীমান্ত স্কয়ারের নীচে ইমানুয়েলস-এ বেশ কয়েকটি ব্যতিক্রম ইফতারের আইটেম দেখা গেল। এগুলোর মধ্য কালাভুনা ও আবগানি চিকেন উল্লেখযোগ্য। ধানমন্ডির স্টার কাবাব হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে স্পেশাল লেগ রোস্ট, খাসির গ্রিল কাবাব ও চিকেন কাবাব কেনার জন্য মানুষের উপচে পড়া ভিড় শুরু হয় দুপুর থেকেই। বাহারি ইফতার আইটেম না কিনে রেস্টুরেন্টে বসেও খেতে পারেন। তবে রেস্টুরেন্টে বসে খেতে চাইলে জায়গা নিয়ে নিতে হবে ঘণ্টাখানেক আগেই।   

/এমডিপি/এনএ/