গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করুন সাবধানে

BT 2বর্তমানে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার এর ব্যবহার প্রায় প্রতিটা ঘরে ঘরেই। এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহারে যেমন দূষণ ও পরিশ্রম উভয়ই কম হয়েছে অন্যদিকে বেড়ে গিয়েছে ঝুঁকি। আমাদের ভুল ব্যবহারে ঘটে যেতে পারে কোন বড়সড় দুর্ঘটনা। প্রায়ই শোনা যায় গ্যাসের আগুন থেকে দুর্ঘটনা ঘটার সংবাদ। তাই আমাদের সিলিন্ডার ব্যবহারের সময় অত্যন্ত সচেতন হতে হবে। এলপিজি বা সিলিন্ডারের গ্যাস আমাদের অনেকের বাড়িতেই ব্যবহৃত হয় রান্নার কাজে। প্রতিদিনের জীবনে অনেকের জন্যই এটি দরকারি। কিন্তু অসাবধানতার কারণে মাঝেমধ্যে এলপিজি সিলিন্ডারও হয়ে যেতে পারে বড় ঝুঁকির কারণ। এতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, এমনকি প্রাণহানিও।

এলপিজি সিলিন্ডারের গ্যাস লিক হতে পারে বিভিন্ন কারণে। হোস পাইপ, রেগুলেটর, গ্যাস ভাল্ব ইত্যাদি থেকে হতে পারে লিক। গ্যাস লিক হলেই বিপত্তি। এ গ্যাস নিশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করে।

গ্যাস সিলিন্ডার নেওয়ার সময় যা যা করতে হবে তা হচ্ছে- ডেলিভারি নেওয়ার সময় অবশ্যই সিলিন্ডারের মেয়াদ দেখে নেওয়া উচিত, প্রতিষ্ঠানের সিল ও সেফটি ক্যাপ সিলিন্ডারে ঠিকভাবে লাগানো আছে কিনা পরীক্ষা করে নিতে হবে, সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক করছে কিনা পরীক্ষা করে নিতে হবে এবং মনে রাখতে হবে যেনো সিলিন্ডার টানা, গড়ানো, ঘষা বা ফেলা উচিত নয়।

ব্যবহারের আগে ও পরেও কিছু বিষয় জেনে রাখা জরুরি আর সেগুলো হচ্ছে-

১)  সিলিন্ডার সমতল স্থানে সোজাভাবে রাখতে হবে।

২) রান্নাঘর খোলামেলা ও পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি ঘরের জানালা দরজা সবসময় খোলা রাখা জরুরি।

৩) রান্না ঘরের মধ্যে কোন প্রকার দাহ্য পদার্থ রাখা যাবে না।

৪) প্লাস্টিক, কাগজ, কেরোসিন ও গ্যাস ভর্তি অন্য সিলিন্ডার সেখানে বর্জনীয়।

৫) সিলিন্ডার সবসময় ছায়া যুক্ত ঠাণ্ডা স্থানে রাখা উচিৎ, যেন কোনও সময় তাপের সংস্পর্শে না আসে।

৬) গ্যাসের পাইপ অবশ্যই সময়মত পরিবর্তন করা উচিত এবং সবসময় বিআইএস অনুমোদিত  প্রতিষ্ঠানের গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা উচিত। যেমন জি গ্যাস।

৭) অবশ্যই বিআইএস অনুমোদিত রেগুলেটর, পাইপ ইত্যাদি ক্রয় করা উচিত অনুমোদিত বিক্রেতার কাছ থেকে।

৮) বছরে অন্তত একবার ডিস্ট্রিবিউটর বা সরবরাহকারী দিয়ে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা পরীক্ষা করিয়ে নেয়া শ্রেয়।

৯) এছাড়া গ্যাস সিলিন্ডার পরিবর্তনের সময় অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যেন চুলা চালু না থাকে।

১০) সিলিন্ডারের মধ্যে রাবারের রিং সঠিকভাবে লাগানো আছে কিনা দেখে নিতে হবে এবং প্রয়োজনে সাবান পানি ব্যবহার করে চেক করতে হবে লিক রয়ে গেছে কিনা সিলিন্ডারে।

অন্যদিকে লিকেজের সমস্যা হলে অযথা আতঙ্ক না হয়ে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে, গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটর বন্ধ করে দিতে হবে অতিসত্ত্বর, দরজা-জানালা খুলে দিয়ে বাতাস চলাচল করতে দিতে হবে, লিকেজ দেখার জন্য কখনই দেশলাই বা মোমবাতি ব্যবহার করা উচিত না, রান্না ঘরের সমস্ত ইলেকট্রিক যন্ত্রাদি বন্ধ রাখা জরুরি, দেরি না করে ডিলারের বা বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং রান্নাঘরে গ্যাস ডিটেক্টর লাগানো যেতে পারে, যাতে গ্যাস লিক হতেই একটা সতর্কবানী পাওয়া যায়।

অসাবধানতাই সকল দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। গ্যাস সিলিন্ডারের দুর্ঘটনার কারণও একই। একটু সতর্ক থাকলেই এই বিপদ এড়িয়ে চলা সম্ভব। সকলের উচিত সম্ভাব্য সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে নিয়ম অনুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা।