ভোজন রসিক পর্যটকদের জন্য মালয়েশিয়ায় ‘জেমবক্স’

নাসি কেরাবু- মালয়েশিয়ার কেলান্তান রাজ্যের অ্যাকোয়ামেরিন একটি  ডিশ। নীল ভাত দিয়ে তৈরি এই খাবার আপনার কৌতূহল জাগিয়ে তুলবে। এ খাবার খেতে হলে কুয়ালালামপুর থেকে ২৮৮ কিলোমিটার দূরে কেলান্তান যেতে হবে। সারাওয়াক  রাজ্যের জনপ্রিয় খাবার আয়াম পানসুহ এবং মি কোলোক এর আসল স্বাদ নিতে হলে যেতে হবে বহুদূর।

মালয়েশিয়ার ১৩টি রাজ্য, এই রাজ্যগুলোর মুখরোচক খাবারের স্বাদ নিতে হলে এতদিন ভোজন রসিকদের ঘুরে বেড়াতে হতো দূর-দূরান্তে। তবে এখন মি তাউহু তাওয়াউ খাবারের স্বাদ নিতে যেতে হবে না সাবাহ রাজ্যে, কিংবা কেলান্তান, তেরেঙ্গানু, পাহাং, জোহর রাজ্যে ঘুরে ঘুরে খুঁজতে হবে না ঐহিত্যবাহী খাবার। সবই মিলবে জেমবক্সে। মালয়েশিয়ায় চালু হয়েছে জেমবক্স, যেখানে এক ছাদের নিচে ১৩ রাজ্যের জনপ্রিয় সব খাবারের স্বাদ নেওয়া যাবে। রাজ্যসেগুলো হচ্ছে কেলান্তান, তেরেঙ্গানু, পাহাং, জোহর, মেলাকা, নেগেরি সেম্বিলান, সেলাঙ্গর, পেরাক, পুলাউ পিনাং, কেদাহ, পেরলিস, সাবাহ এবং সারাওয়াক। দেশটির তিনটি ফেডারেল টেরিটরি হচ্ছে কুয়ালালামপুর, পুত্রজায়া এবং লাবুয়ান।

‘জেমবক্স’ মূলত একটি রাতের বাজার, যেখানে মালয়েশিয়ার ১৩টি রাজ্যের জনপ্রিয় সব খাবার, সংস্কৃতিক আয়োজন উপভোগ করার চমকপ্রদ আয়োজন রয়েছে। কুয়ালালামপুর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে  নেগেরি সেম্বিলান রাজ্যে এই বাজারটি। পর্যটকদের মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের খাবার চেখে দেখার সুযোগ করে দিতেই এই আয়োজন। ২৫  একর জায়গা জুড়ে জেমবক্স সফট-লঞ্চ হয়েছিলো ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে।

মালয়েশিয়ার খাবার বৈচিত্র্যময়। দেশটিতে মালয়, চীনা এবং ভারতীয় জাতিসত্তা মিশ্রণের কারণে খাবারেও রয়েছে বৈচিত্র্য। জেমবক্স এই বৈচিত্রময় খাবার ও সংস্কৃতি তুলে ধরছে পর্যটকদের কাছে। খাবারের পাশাপাশি ১৩টি রাজ্যের বিশেষ পণ্য, হস্তশিল্পও রয়েছে এখানে। বছরজুড়ে নানা উৎসব উদযাপনে থাকে সাংস্কৃতিক আয়োজন।

জেমবক্স এর চিফ অপারেটিং অফিসার রেমন্ড ওই বলেন, ‘জেমবক্স  পর্যটন শিল্পে মালয়েশিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করছে। মালয়েশিয়ার নতুন পর্যটন হটস্পট  হিসেব আমরা কাজ করছি। এই প্রকল্পটি সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য  তুলে ধরতে বছরজুড়ে নানা রকমের আয়োজন থাকে। এখানে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের নতুন করে  বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে।’

মালয়েশিয়ার ট্যুরিজম প্রমোশন বোর্ডের সিনিয়র পরিচালক (আন্তর্জাতিক প্রমোশন, এশিয়া-আফ্রিকা) মনোহরন পেরিয়াস্বামী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘শুধু মাত্র অবকাশ যাপন নয়, আমরা সারা বিশ্বে মালয়েশিয়াকে বহুমাত্রিকভাবে তুলে ধরছি। নানাভাবে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কাজ করছি। শুধু প্রাকৃতিক স্থান কিংবা থিম পার্ক নয়, অনেকেই বৈচিত্র্যময় খাবারের সন্ধান করেন। তাদের জন্য জেমবক্স হচ্ছে উৎকৃষ্ট স্থান। পুরো মালয়েশিয়া না ঘুরেই সকল ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ নেওয়া যাবে এখানে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘জেমবক্স-এ নগদ অর্থে লেনদেনের সুযোগ আছে। তবে এই বাজারটিকে আমরা ক্যাশলেস মার্কেট হিসেবে উপস্থাপন করতে চাই। নগদ অর্থ বহন, একচেঞ্জজনিত জটিলতা ছাড়াই নিরাপদ কেনাকাটার অভিজ্ঞতা দিতেই এ উদ্যোগ।’