ত্বক ফেশওয়াস দিয়ে পরিষ্কার করছেন, নিয়মিত ব্যবহার করছেন ময়েশ্চারাইজারও। কিন্তু তবুও যেন ত্বকের জৌলুস বাড়ছে না, উল্টো বেশ বিবর্ণ দেখাচ্ছে। কেন এমন হয় জানেন? এক্সফোলিয়েশনের অভাবেই এমনটি হতে পারে
এক্সফোলিয়েশন আসলে কী?
সাপ যেমন খোলস ছাড়ে, ঠিক তেমনই আমাদের ত্বকও সময়ে সময়ে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়। তবে তা চোখে দেখা যায় না। ত্বকের উপর জমে থাকা মৃত কোষ সরিয়ে ফেলার যে পদ্ধতি, তাকেই এক্সফোলিয়েশন বলা হয়। আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেই পুরনো মৃত কোষ সরিয়ে ফেলতে পারে। মরা চামড়া সরিয়ে নতুন কোষ আসতে মোটামুটি এক থেকে তিন মাস সময় লাগে। তা সত্ত্বেও নিয়মিত প্রাকৃতিক বা রাসায়নিক উপাদান দিয়ে এক্সফোলিয়েট করার প্রয়োজন হয়। বয়স, জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাবার কিংবা দূষণের কারণে স্বাভাবিক এই প্রক্রিয়ার গতি অনেক সময় ধীর হয়ে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই ত্বক জেল্লা হারায়। রোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে গেলে ব্রণের উপদ্রব বেড়ে যায়। এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসকেরা এক্সফোলিয়েট করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
এক্সফোলিয়েট করলে শুধুই কি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে?
ত্বকের চিকিৎসকেরা বলছেন, ত্বকের উপর সেবাম, মৃত কোষ জমতে থাকলে তা প্রাণহীন, নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। ত্বকের মসৃণতা হারিয়ে যায়। ত্বকের রন্ধ্রে সেবাম জমে ব্রণের প্রকোপ বাড়ে। এই সব সমস্যার ‘ওয়ান স্টপ সলিউশন’ হতে পারে এক্সফোলিয়েটর।
কত দিন পরপর এক্সফোলিয়েট করা উচিত?
কে কত দিন অন্তর এক্সফোলিয়েট করবেন, তা নির্ভর করে ত্বকের ধরনের উপর। তবে এক্সফোলিয়েটর ইচ্ছে মতো ব্যবহার করা যাবে না। ত্বক তৈলাক্ত হলে সপ্তাহে দুই তিন দিন এক্সফোলিয়েট করাই যথেষ্ট। কিন্তু যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক বা স্পর্শকাতর, তারা মাসে দুইবার এক্সফোলিয়েট করুন। ত্বকে যদি আগে থেকে কোনও সমস্যা থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রেও এক্সফোলিয়েশন করা যাবে না।
অতিরিক্ত এক্সফোলিয়েট করলে কি ত্বকে সমস্যা হতে পারে?
এক্সফোলিয়েশন দুই রকম ভাবে করা যেতে পারে। প্রাকৃতিক এবং রাসায়নিক। প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর হোক বা রাসায়নিক এক্সফোলিয়েটর, কোনোটিই খুব ঘন ঘন ব্যবহার করা যায় না। তাতে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক বা স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে। ত্বকে প্রদাহজনিত নানা রকম সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কারণ এক্সফোলিয়েট করে ত্বকের উপরের পরত সরিয়ে ফেলার পর ত্বক আরও স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে। তারপর সঠিকভাবে ত্বকের যত্ন না নিলে সমস্যা বেড়ে যায়। ত্বকের আর্দ্রতা, পিএইচের সমতা ধরে রাখতে যথেষ্ট পরিমাণে ময়েশ্চারাইজারও ব্যবহার করতে হয়।
এক্সফোলিয়েট না করলে কী হবে?
যদি কেউ এক্সফোলিয়েট করতে না চান, না-ই করাতে পারেন। তাতে সমস্যার কিছু নেই। এক্সফোলিয়েট না করলে সাময়িকভাবে ত্বকের জৌলুস হারিয়ে যায়। চাপা পড়তে পারে। তবে কয়েক সপ্তাহ পর, শরীরের স্বাভাবিক নিজস্ব এক্সফোলিয়েশন পদ্ধতিতে তা নিজে থেকেই সরে যাবে।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা