আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগের দাবি আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে ভিড় জমান। পরে বেলা ১১টার দিকে আবাসিক হলগুলোর সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে গোলচত্বরে এসে জামযেত হয়। পরে সেখানে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
শাবির বিভিন্ন ভবনে ঝুলছে তালা, উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
এদিকে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) শফিউল আলম জুয়েলকে ক্যাম্পাসে পাঠিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি ইয়াসির সরকার, সাব্বির আহমেদ, তানহা তাহসীনের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ, রায়ট কার ও জলকামানসহ অন্যান্য পুলিশি যান সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে রায়ট কার ও জলকামানের গাড়ি রাতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ত্যাগ করে। তবে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতয়েন রয়েছে।
হল না ছেড়ে ক্যাম্পাসে শাবি শিক্ষার্থীরা, ভিসির পদত্যাগ দাবিশাবিপ্রবির ঘটনায় তদন্ত কমিটি
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্রক্তিগত কর্মকর্তা শফিউল আলম জুয়েল সাংবাদিকদের বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বলেন, আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার দায়ভার তিনি নেবেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ারও ব্যবস্থা করবেন। এছাড়া শাবি শিক্ষার্থীদের সহিংসতার পথে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ঢাবিতে শাবির সাবেক শিক্ষার্থীদের সমাবেশ ও মশাল মিছিলপরে বিকাল ৪টায় আইআইসিটি ভবনের সামনে উপাচার্যকে মুক্ত করতে পুলিশ উপস্থিত হয়। এ সময় ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন? প্রশাসন জবাব চাই’ স্লোগানে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় লাঠিপেটার পাশাপাশি, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে পুলিশ ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করে ভিসিকে উদ্ধার করে বাংলোতে পৌঁছে দেন। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শাবি শিক্ষক সমিতি স্তম্ভিত, মর্মাহত এবং লজ্জিতপরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) ১২টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। তবে শিক্ষার্থীরা হল না ছেড়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন:
অনির্দিষ্টকালের জন্য শাবিপ্রবি বন্ধ ঘোষণা, ছাড়তে হবে হল
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জ, আহত শতাধিক
শাবিপ্রবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মশাল মিছিল
শাবিপ্রবিতে ছাত্রীদের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি প্রগতিশীল ছাত্র জোটের