শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, সহপাঠীদের আন্দোলনে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যানজট

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে  মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন সহপাঠীরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টা থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঘোনাপাড়া মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের স্লোগানে উত্তাল মহাসড়ক। ১০ ঘণ্টার বেশি সময় সড়ক অবরোধ করে রাখায় ওই সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন মানুষজন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভোরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঘোনাপাড়া মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ধর্ষকের গ্রেফতারসহ দ্রুত বিচারের দাবি জানান। মহাসড়কে বসে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় ছোটবড় মিলে অন্তত দুই হাজার পরিবহন আটকা পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

আরও পড়ুন: সহপাঠীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের স্লোগানে উত্তাল মহাসড়ক

শিক্ষার্থীরা বলছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের আইনের আওতায় আনতে হবে। ওই এলাকাটি লাইটিং ও সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত সড়কে অবস্থান করবেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পরিবহন আটকা পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন খুলনা থেকে টেকেরহাটগামী বাসযাত্রী দিগন্ত দাশ। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। কোনও গাড়ি চলছে না। আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। কখন এই সমস্যার সমাধান হবে, কখন আমরা গন্তব্যে যেতে পারবো তা বলতে পারছি না।’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে ঘটনাস্থলে এসেছেন উপাচার্য, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা

এরই মধ্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে ঘটনাস্থলে এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলেও সড়ক থেকে সরেননি শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেফতার ৩

বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব বলেন, ‘জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এখানে এসেছেন। এখানে বসেই শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য বৈঠক করবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাইম বলেন, বাইপাস দিয়ে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি আমরা। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সড়ক ছাড়তে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তারা সড়ক না ছাড়ায় যানজট দীর্ঘ হচ্ছে। দুই হাজার যানবাহন আটকা পড়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।

আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

জানা গেছে, বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ২৫ মিনিটে গোপালগঞ্জ জেলা স্কুলের নির্মাণাধীন ভবনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার বন্ধুর সঙ্গে গোপালগঞ্জ সদরের নবীনবাগ হেলিপ্যাডের সামনে থেকে হেঁটে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তাদের অটোতে তুলে নেওয়া হয়। পরে ৭/৮ জন মিলে তাদের গোপালগঞ্জ জেলা স্কুলের নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে বন্ধুকে মারধর করে ওই শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।