হাজী দানেশে ৪ হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, তদন্ত কমিটি গঠন

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ছেলেদের আবাসিক হলগুলোতে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ডরমেটরি-২ এবং তাজউদ্দীন আহমদ হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে। এ ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। 

শুক্রবার (১ জুন) কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার বলেন, ‘আমরা দ্রুততম সময়ের মদ্যে তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি দিতে চাই। এরমধ্যেই আমাদের কমিটি কাজ শুরু করেছে।’ 

আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরি-২ হলের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আনজারুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী বেধড়ক মারপিট করেন। এতে ওই শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হলে তাকে দিনাজপুরের এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা মারামারির পর শেখ রাসেল হলে গিয়ে আশ্রয় নেন। 

এ খবর ডরমেটরি-২ হলের শিক্ষার্থীদের কাছে গেলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তারা শেখ রাসেল হলের দিকে গেলে ডরমেটরি-২ হলের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলার পর একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। 

মীমাংসা বৈঠকের শেষের দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের একজন শিক্ষার্থী ডরমেটরি-২ হলের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মারধরের শিকার হন।  পরে শেখ রাসেল হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা ডরমেটরি-২ হলের ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও মারপিট চালায়। পরবর্তীতে ডরমেটরি-২ এবং তাজউদ্দিন আহমদ হলের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে আক্রমণ চালায়। কয়েক দফা সংঘর্ষের পর তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে প্রবেশ করে প্রায় ত্রিশ মিনিটের মতো অবস্থান করে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে বের হয়ে আসে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের হল সুপার অধ্যাপক ড. মো. হাসানুর রহমান বলেন, সংঘর্ষের ঘটনার বিষয়টি এখন আর আমাদের হাতে নেই। তদন্ত কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা ও অপরাধীদের খুঁজে বের করা হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মামুনুর রশিদ বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোটেই কাম্য নয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।' 

উল্লেখ্য, সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন থমথমে অবস্থা ও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার  চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।