রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের তফসিল, পূর্ণাঙ্গ আবাসিকতার রোডম্যাপ ঘোষণাসহ ৯ দফা দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার সকাল ১০টার দিকে ‘রাবি সংস্কার আন্দোলন’ ব্যানারে এ কর্মসূচি শুরু হয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে প্যারিস রোডে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে অবস্থান নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘অবৈধ সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘এই মুহূর্তে দরকার রাবি সংস্কার’, ‘জুলাইয়ের অঙ্গীকার, রাবি হবে সংস্কার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘মার্চ ফর আওয়ার রাইটস’। কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমাজকর্ম, ইসলামিক স্টাডিজ, লোকপ্রশাসন, দর্শনসহ বিভিন্ন বিভাগের কয়েকটি ব্যাচ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে এ আন্দোলনে একাত্মতা জানায়।
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো—পরীক্ষায় রোলবিহীন খাতা মূল্যায়ন ও খাতা চ্যালেঞ্জের সুযোগ নিশ্চিত করা; ক্যাম্পাসে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা; বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রকে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হিসেবে কার্যকর করা; প্রশাসনিক সব কার্যক্রম ডিজিটাল ও অনলাইনভিত্তিক করা (ক্যাশলেস ক্যাম্পাস); ডাইনিংয়ে মানসম্মত খাবারের জন্য পর্যাপ্ত ভর্তুকি দেওয়া; কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের অবকাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত সংস্কার এবং পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি দ্রুত কার্যকর করা।
সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘এই দাবিগুলোর বিষয়ে প্রশাসনকে এক মাসের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ১৫ দিন প্রত্যেক হল ও একাডেমিক ভবনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়েছি। প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে কেবল এই যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণ করা সম্ভব। এসব ব্যাপারে প্রশাসনের অবস্থান স্পষ্ট ও বাস্তবায়ন না হলে আমরা সর্বোচ্চ অবস্থানে যাবো।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এ দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমূল পরিবর্তন ঘটবে। প্রশাসনকে বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতেই হবে। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনের দিকে যাবো আমরা।’
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী সামসাদ জাহান বলেন, ‘আমাদের ৯ দফা দাবি যৌক্তিক। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।’