সাফাত ও সাদমানকে জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ

সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফ (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)বনানীতে ধর্ষণ মামলার দুই আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। রিমান্ডে নেওয়ার পর তাদের কাছ থেকে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলেও আশা করা হচ্ছে। ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে শুক্রবার দুপুরে এই প্রেস ব্রিফিং হয়। কৃষ্ণপদ রায় আরও জানিয়েছেন, দুই আসামি দাবি করেছে অভিযোগকারী তরুণীদের সঙ্গে তাদের সম্মতিক্রমেই তারা যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছে।ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিং

কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। রিমান্ডে নেওয়ার পরে প্রকৃত জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। তদন্তে আশা করছি  বিষয়টিকে একটি যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাবো। এই মামলার তদন্তকে একটি মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।’

এদিকে ধর্ষণের ঘটনার পর বনানী থানা পুলিশের কর্তব্য পালনে কোনও অবহেলা রয়েছে কিনা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ডিএমপির পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এডিশনাল কমিশনার মিজানুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। এর বাকি দুই সদস্য হলেন- ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন ও যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায়।

আর চার সদস্যের তদন্ত সহায়ক কমিটির প্রধান করা হয়েছে যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়কে। এই কমিটির সদস্যরা হলেন- ডিসি (ডিবি নর্থ) শেখ নাজমুল আলম, ডিসি (উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন) ফরিদা ইয়াসমিন, ডিসি (গুলশান) মুস্তাক আহমেদ। বৃহস্পতিবার এই দুই কমিটি গঠিত হয়েছে।সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফ

বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সিলেটের জালালাবাদ থানাধীন পাঠানতুলা এলাকা থেকে সাফাত ও সাদমানকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশ।  রাতেই তারা ঢাকা পৌঁছান। দুই জনকে গ্রেফতারের পর সিলেট মহানগর উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা জানান, পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে ঢাকার গোয়েন্দা দল সাফাত ও তার সহযোগীদের সম্পর্কে তথ্য দেয়। এর ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশ ও সিলেট জেলা মহানগর পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়।

প্রসঙ্গত, ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে গত ৬ মে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন দুই তরুণী। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৮ মার্চ পূর্বপরিচিত সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওই দুই তরুণীকে জন্মদিনের দাওয়াত দেয়। এরপর তাদের বনানীর ‘কে’ ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কের ৪৯ নম্বরে রেইনট্রি নামের হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, সেখানে দুই তরুণীকে হোটেলের একটি কক্ষে আটকে রেখে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ধর্ষণ করে সাফাত ও নাঈম। এ ঘটনা সাফাতের গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিও করানো হয় বলেও উল্লেখ করা হয় এজাহারে। ধর্ষণ মামলার আসামিরা হলো- সাফাত আহমদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ।

ছবি: নাসিরুল ইসলাম

/এনএল/এফএস/ 

আরও পড়ুন- 

প্রযুক্তির জালে আটকা পড়ে সাফাত ও সাদমান

দিনমজুরের ছেলে হালিম যেভাবে নাঈম আশরাফ

যে বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল সাফাত ও সাদমান

পলাতক থেকেও সক্রিয় ছিল ধর্ষণ মামলার আসামিরা