দেশেই উৎপাদন করা যাবে চীন ও রাশিয়ার টিকা

চীন ও রাশিয়া থেকে করোনাভাইরাসের টিকা আনার নীতিগত সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল সরকার। এ দুটি দেশের সঙ্গে যৌথভাবে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের জন্য চুক্তিও সই করেছে বাংলাদেশ। এবার এ দুটি দেশ উদ্ভাবিত করোনার টিকা বাংলাদেশের কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির মাধ্যমে দেশেই উৎপাদনে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটি।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী জানান, আজকের বৈঠকে এ (দেশে চীন ও রাশিয়ার টিকা উৎপাদন) সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে যেসব কোম্পানির সঙ্গে ওই দুটি দেশের চুক্তি হবে তারা টিকা উৎপাদন শুরু করবে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে আজকের বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এসব অনুমোদনের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, আজকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কিট ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর কেনাকাটার দুটি প্রস্তাব ছিল। যেহেতু ভারত টিকা রফতানি বন্ধ করেছে, তাই বিকল্প সোর্স থেকে টিকা নেওয়ার জন্য আজকের বৈঠকে রাশিয়া ও চীনের দুটি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশের কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির টিকা উৎপাদনের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে কোন কোন ওষুধ কোম্পানির মাধ্যমে এ টিকা উৎপাদন হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, আপাতত নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে যখন চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ওষুধ কোম্পানির চূড়ান্ত চুক্তি হবে তখন অর্থ ছাড়ের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।

ড. শাহিদা আক্তার আরও জানান, রাশিয়ার স্পুটনিক-৫ এবং চীনের সিনো ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২২ এপ্রিল রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের জন্য চুক্তি সই করেছিল বাংলাদেশ। তবে দেশটির সঙ্গে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও টিকা কিনবে সরকার। অন্যদিকে, মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এসে টিকা দিতে সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছেন।

বুধবারের সভায় অর্থনৈতিক সম্পর্কিত কমিটির অনুমোদনের জন্য তিনটি এবং ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির অনুমোদনের জন্য সাতটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ক্রয়ের প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি, বিদ্যুৎ বিভাগের একটি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের একটি প্রস্তাবনা ছিল। ক্রয়ের প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ এক হাজার ৮০৮ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার ১৬৪ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে এক হাজার ৭৯২ কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮৪৬ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ১৬ কোটি তিন লাখ ৪৫ হাজার ৩১৮ টাকা। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি পাঁচটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। মালয়েশিয়ায় সরকার পরিবর্তনের কারণে দুটি প্রস্তাবে সে দেশের সরকার অনুমোদন দেয়নি বলে জানান ড. শাহিদা।

আরও পড়ুন-

চীনের সিনোফার্ম টিকা নিয়েও ‍সিদ্ধান্ত শিগগিরই

দুই ডোজের স্পুটনিক-ভি’র কার্যকারিতা ৯১ শতাংশ

৪০ লাখ ডোজ স্পুটনিক ভি আসছে

রাশিয়ার স্পুটনিক ভি ব্যবহারে অনুমতি দিলো সরকার

বাংলাদেশে ‘স্পুটনিক ভি’ উৎপাদনের প্রস্তাব রাশিয়ার

সিনোফার্ম এবং স্পুটনিক-ভি ব্যবহার হতে পারে

দুই সপ্তাহের মধ্যে কোনও টিকা আসার সম্ভাবনা নেই