রেলকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী: কাজী নাবিল আহমেদ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলকে মৃত প্রায় অবস্থা থেকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নকাজকে আরও বেগবান করতে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথ যোগাযোগসহ অবকাঠামো উন্নয়নকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। মানুষ যেন নিজের মতো করে নিজস্ব উদ্যোগে অর্থনৈতিক মুক্তিসাধন করতে পারেন। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়েকে মৃতপ্রায় অবস্থা থেকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন।

রবিবার (২৩ মে) রেলভবনে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণে’র লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

কাজী নাবিল আহমেদ আরও বলেন, ‘আমি আরও আনন্দিত হয়েছি যে রেলমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে গত দুই থেকে আড়াই বছর ধরে রেলপথ মন্ত্রণালয় নতুন করে পরিচিতি পেয়েছে। বিশেষ করে এই মহামারির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করেও রেল মন্ত্রণালয় কাজ করে উন্নয়ন ধারা এগিয়ে নিয়ে চলেছে।’

তিনি আরও বলেন, আমরা এরইমধ্যে এখানে কাজ করেছি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আমাদের যে কাজ তার প্রায় ৯৮ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। গত ৩ বছর ধরে আমরা এখানে কাজ করছি। এটুকু আপনাদের নিশ্চিত করছি, এ কাজটিও আমাদের কোম্পানি অত্যন্ত গুরুত্বসহ যথাসময়ে শেষ করবে।

চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠান

চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন এমপি বলেন, একটি দেশের সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া সুষম উন্নয়ন সম্ভব নয়। রেলওয়ে একসময় অবহেলিত ছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলকে গুরুত্ব দিয়ে ২০১১ সালে আলাদা মন্ত্রণালয় করে দিয়েছেন। রেলকে আধুনিক ও যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

রেলপথ মন্ত্রী আরও বলেন, রেলওয়েতে চলমান পদ্মা সেতু রেল-সংযোগ প্রকল্প, যমুনা নদীর ওপর আলাদা বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেল লাইন নির্মাণ, যেটি ২০২২ সালে চালু হবে, মোংলা পোর্টে রেল-সংযোগসহ রেলওয়েতে এখন অনেক প্রকল্প চলমান আছে। আম পরিবহনের জন্য গত বছরের মতো এবারও ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালু হবে, কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য লকডাউনের মধ্যেও চার জোড়া পারসেল ট্রেন চলাচল করছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পের মোট ব্যয় এক হাজার ২০২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। ফরিদপুর ও মাগুরা জেলার মধ্যে প্রকল্পের অবস্থান। প্রকল্পটি মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৯০ কিলোমিটার মেইন লাইন নির্মাণ। কামারখালী ও মাগুরা স্টেশন ইয়ার্ডে ৪ দশমিক ৯ কিলোমিটার লুপ লাইন নির্মাণ। ২টি নতুন স্টেশন নির্মাণ (কামারখালী ও মাগুরা)। এতে ২৮টি মাইনর ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্পটি মাগুরা জেলাকে বিদ্যমান রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত করবে। রেলপথের মাধ্যমে উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে বাস্তবায়নাধীন পদ্মা সেতুর মাধ্যমে রাজধানীর (ঢাকার) সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপন হবে।

অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাইফুজ্জামান শিখর, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, সিসিসিএল কোম্পানির পরিচালক কাজী আনিস আহমেদ ও কাজী ইনাম আহমেদ, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক মো. আসাদুল হক এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিআরইসি-সিসিসিএল জেভির পক্ষে লউ জুয়ে বিং এবং প্যাকেজ ডব্লিউডি-২: (সেতু নির্মাণ)-এর বিপরীতে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ও সিআরসিসি-এমএএইচএল জেভি’র পক্ষে তাং জিয়াও জিন।