টিকা উৎপাদন করলে বিদেশেও রফতানি করতে পারবো: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে করোনার টিকা উৎপাদন করতে চাইলে তারা কাঁচামাল দিয়ে সহায়তা করবে। যদি উৎপাদন শুরু করতে পারি তাহলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা তা বিদেশেও রফতানি করতে পারবো।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মাদকাসক্তি নিরাময় ও মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ কেন্দ্রের (ওয়েসিস) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা যদি করোনার টিকা দেশে উৎপাদন করতে চাই তাহলে কাঁচামাল (র মেটেরিয়াল) দিয়ে তারা সহায়তা করবে। এটা সম্ভব হলে আমরা বিদেশে টিকা রফতানি করতে পারবো। ভ্যাকসিনের জন্য এখন পর্যন্ত ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে অর্থনীতিসহ দেশের কোনও কিছু নিয়ন্ত্রণে থাকে না। আমরা একদিনে ৮০ লাখ টিকা দিয়েছি, যা পৃথিবীর অনেক কম দেশে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে মাদক আসে, মাদক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। একজন ব্যক্তি যখন মাদকাসক্ত হয়ে যায়, তখন সে নিজেকে, তার পরিবারকে, এমনকি সমাজকেও ধ্বংস করে দেয়। এবং যত রকম অসামাজিক কাজকর্ম রয়েছে তাতে জড়িয়ে পড়ে। আফসোসের বিষয়, অল্প বয়সের ছেলেমেয়েরা মাদকে জড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ মাদকাসক্ত। এই সংখ্যাটি আরও বেশি হতে পারে। আমরা আশা করবো প্রতিটি বিভাগে এ ধরনের মাদক নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণের জন্য পুলিশ কাজ করবে। আধুনিক চিকিৎসা দিয়ে মাদকাসক্তদের সারিয়ে তুলবে এবং এবং সুস্থ জীবনে তাদের ফিরিয়ে নিয়ে কাজ করে যাবে।

পুলিশের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। যারা আসক্ত হয়ে যায় ওদের সহানুভূতির সঙ্গে দেখতে হবে। সহানুভূতির সঙ্গে চিকিৎসা দিয়ে তাকে ভালো করতে হবে। তারা কোনও না কোনও কারণে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। সে কারণটা আমাদের দেখতে হবে। সরকারিভাবে এই মাদক নিরাময় কেন্দ্রে একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। পুলিশ হাসপাতালে ক্যানসার বিষয়ক একটি বিভাগের বিষয়েও সহায়তা করা হবে।

এ ধরনের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে প্রতিটি জেলায় কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে থাকা প্রয়োজন। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, আমরা দেড় বছর ধরে করোনার চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের পুলিশ বাহিনী এ ব্যাপারে সহায়তা করে আসছে। এখন দিনে ৫০ হাজার টেস্ট হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য করোনার বেড রয়েছে ২০ হাজার। আইসিইউ বেড ছিল ২০০, এখন দুই হাজারের অধিক। এখন অনেক স্থানেই ৯০ ভাগের মতো আইসিইউ বেড ফাঁকা পড়ে আছে। এখন তেমন করোনা রোগী নেই।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি  ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আজিজুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমান।