‘ওরে আমার বাপ কই, আইলো না ক্যান’

ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে হামলায় নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুরের মরদেহ সংরক্ষিত আছে ইউক্রেনের একটি মর্গে। বুধবার (৯ মার্চ) দুপুরে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে এসে পৌঁছায় ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ২৮ নাবিক। কিন্তু আসেনি হাদিসুরের মরদেহ। তাতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা-মা-ভাই। হাদিসুরের বাবা বুকে ছেলের ছবি আঁকড়ে আহাজারি করে বলেন— ওরে বাবা, আমার বাপ কই, আইলো না ক্যান?

 

ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলা, নিহত ১ 

 

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালের সামনে একইভাবে আহাজারি করছিলেন হাদিসুরের ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স। ‌এ সময় তার বাবা আব্দুর রাজ্জাক, মা রাশিদা বেগম ও আরেক ভাই তরিকুল ইসলামও সঙ্গে ছিলেন। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে বিমানবন্দরের পরিবেশ।

হাদিসুরের মা রাশিদা বেগম বলছিলেন, ‘ওরে দেখতে পারুম কিনা। ‌বাবারে, হাদিসরে। একবার যদি ছুঁইতে পারতাম। ওর লাশটা কেউ আইনা দ্যান।’ ‌

বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটের সামনে পরিবারটিকে কাঁদতে দেখে চোখ মুছতে দেখা যায় অনেককেই।

সকাল দশটায় হাদিসুরের পরিবারের লোকজন বিমানবন্দরে আসেন। নিরাপত্তাকর্মী, স্বজনরা তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কিছুতেই মানতে পারছিলেন না ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স। তার দাবি একটাই—ভাইয়ের লাশ দেখতে চাই।

হাদিসুর-রহমান

চিৎকারের একপর্যায়ে সড়কেই শুয়ে পড়েন প্রিন্স। বলেন, ‘আমারে নিয়া আমার ভাইয়ের কত স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন নষ্ট হয়ে গেলো।’

ইউক্রেনে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ-২৮-এ বোমা হামলায় নিহত হাদিসুরের লাশ দ্রুত দেশে আসবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ইউরোপ উইংয়ের মহাপরিচালক সিকদার বদিরুজ্জামান। দুপুরে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

274008774_633876247680069_6593520340593090757_n

তিনি বলেন, আমাদের ২৮ জন যে ক্রু মেম্বার, তাদের বুকে নিতে পেরেছি। এটা সবচেয়ে আনন্দের বিষয়। তারা তাদের পরিবারের কাছে যাবে, তারা এখন সেইফ। বাকি একজনের হাদিসুর রহমান। তার পরিবারের প্রতি আমরা আবারও সহমর্মিতা জানাচ্ছি এবং তার মরদেহ অতিসত্বর দেশে আনতে পারবো।

274423233_689344478772618_3992821737888708270_n

 

ছবি: নাসিরুল ইসলাম