নুরুল হক নুরুর গণঅধিকার পরিষদের পর একই দিনে ‘নজিরবিহীন’ভাবে নিবন্ধন পেল মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য। নির্বাচন কমিশন সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দলটিকে নিবন্ধন দিয়েছে। দলটির নিবন্ধন নম্বর ৫২ এবং দলীয় প্রতীক কেটলি।
ইসির সচিব শফিউল আজিম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ অনুযায়ী ‘নাগরিক ঐক্যকে’ কে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিয়েছে।
এর আগে সোমবার গণঅধিকার পরিষদকে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ দলটিকেও আরপিও’র একই বিধান অনুযায়ী নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে।
গণপ্রতিনিধি ১৯৭২ এর চ্যাপ্টার VIA-এ রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। এতে কোন কোন শর্তে দলগুলো নিবন্ধন পাবে সেটা স্পষ্ট করে বলা আছে। দলগুলোর নিবন্ধনের শর্ত হচ্ছে- ১. বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে অনুষ্ঠিত যেকোনও সংসদ নির্বাচনে দলীয় নির্বাচনি প্রতীক নিয়ে কমপক্ষে একটি আসনে জয়ী হওয়ার রেকর্ড থাকতে হবে। ২. যেকোনও একটি আসনে দলীয় প্রার্থীকে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ ভোট পেতে হবে। ৩. কেন্দ্রীয় কমিটিসহ একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয়, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা কার্যালয়, অন্তত ১০০টি উপজেলায় কার্যালয় এবং প্রতিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তত ২০০ জন ভোটারের তালিকাভুক্তি থাকতে হবে।
তবে নাগরিক ঐক্য ও নাগরিক অধিকারকে কোন প্রেক্ষাপটে বা কোন শর্তে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে সেটা স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সচিব শফিউল আজম বাংলাম ট্রিবিউনকে বলেন, দল দুটি নিবন্ধন পেতে আগেই কমিশনে আবেদন করেছিল। ওই সময় তাদের কিছু তথ্যে ঘাটতি ছিল। ওই শর্তগুলো পূরণ করার কারণে ইসি পুনর্বিবেচনা করে। ফুল কমিশন তাদের নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সাধারণত নির্বাচন কমিশন প্রত্যেক সাধারণ নির্বাচনের আগে নিবন্ধনের আগ্রহী দলগুলোর কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই করে শর্তপূরণ সাপেক্ষে নিবন্ধন দিয়ে থাকে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন ‘যাচাই-বাছাই’ করে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) নামে দুই রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দিয়েছিল। ওই সময় আবেদন করা ৯৩টি দলের মধ্যে নিবন্ধন দেওয়া এ দুটি দলসহ ১২ দলকে প্রাথমিকভাবে তালিকাভুক্ত করে তাদের মাঠ পর্যায়ের তথ্য যাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
পরে মাঠের তথ্য যাছাইয়ের সময়ে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য ও গণঅধিকার পরিষদসহ বাকি দলগুলো ‘বাদ’ পড়ে যায়। ওই সময় ইসি সচিব জাহাংগীর আলম জানিয়েছিলেন– মাঠের তথ্যে গড়মিল পাওয়ার কারণে তারা বাদ পড়েছে।
এর মধ্যে এবি পার্টি উচ্চ আদালতের আদেশে গত ২১ আগস্ট নিবন্ধন পেয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ জাসদ, নাজমুল হুদার তৃণমূল বিএনপি, ববি হাজ্জাজের এনডিএমসহ আরও কয়েকটি দল বিভিন্ন সময়ে আদালতের আদেশে ইসির নিবন্ধন পেয়েছে।