ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রায় মুখোশ পরা যাবে না। কোনও কোম্পানির প্রচারে শোভাযাত্রার ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কিছু কিছু কোম্পানি তাদের প্রচারণার জন্য চুক্তি ভিত্তিতে লোক নিয়োগ করেন একই ধরনের টি-শার্ট পরে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে। এই সুযোগ নিয়ে দুর্বৃত্তরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। এ বছর বিষয়টির দিকে লক্ষ রাখা হবে। শোভাযাত্রার ভেতরে, সামনে ও পেছনে আমাদের বিশেষায়িত দল সোয়াট টিম নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশে এবার নারী-পুরুষের আলাদা লাইন থাকবে।
আরও পড়তে পারেন: বর্ষবরণে সাদা-লাল পোশাক ঐতিহ্য নয়, কেবলই ফ্যাশন
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রায় কেউ যেন মুখোশ না পরেন, আয়োজকদের সে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে শোভাযাত্রা উপলক্ষে তৈরি মুখোশ হাতে রাখা যাবে।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে রমনা-শাহবাগ-টিএসসিসহ পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং টিএসসিতে তিনটি কন্ট্রোল রুম করা হবে। সেখানে থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাবেন দায়িত্ব পালনকারী সদস্যরা। টিএসসি, শাহবাগ ও রমনা পার্কে তিনটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
গত বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যৌন হয়রানির ঘটনায় জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
এবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে সব ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। রাতে কোনও ধরনের অনুষ্ঠান চালানো যাবে না। তবে সন্ধ্যার পরে রাস্তায় হাঁটতে, রেস্তোরাঁয়া বসে গল্প করতে কোনও নিষেধ নেই। ইনডোরে সব অনুষ্ঠান করা হবে। শুধু উন্মুক্ত স্থানে বড় ধরনের গানের কনসার্ট বা অনুষ্ঠান করা যাবে না। সন্ধ্যার পরে বাড়ির ছাদে এবং রেস্তোরাঁয় আপনার উৎসব উদযাপন করুন, পুলিশ আপনাদের নিরাপত্তা দেবে।
নিরাপত্তার স্বার্থে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানরত এলাকায় ১৩ এপ্রিল ভোর ছয়টা থেকে ১৪ এপ্রিল রাত নয়টা পর্যন্ত বহিরাগত কোনও গাড়ি প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টিকারযুক্ত গাড়ি চলাচল করতে পারবে বলে জানান।
আরও পড়তে পারেন: পহেলা বৈশাখের আগেই পাট শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নাগরিকদের নিরাপত্তা পুলিশ দেবে এটাই স্বাভাবিক। তবে তাদের অনুষ্ঠানের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে। পহেলা বৈশাখের উদযাপন সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হয়। বিকেল সাড়ে ৪ টার পর মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়, তখনই যদি অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে আমরা কোনও অনুষ্ঠান নাও করতে পারি। নাগরিক হিসেবে আমাদের উচিত পুলিশকে সহায়তা করা। তা সবাই করব। তবে বিকেলের আগে যদি অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলা হয়, তাহলে আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করব।
পুলিশ ৫ টার পর অনুষ্ঠান করতে না দিলে কী করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তাহলে করব না। কারণ আমার নিরাপত্তার দায়িত্ব আমি নিতে পারি, তবে অন্য কারও নিরাপত্তার দায়িত্ব আমি নিতে পারব না। পুলিশের শর্ত উপেক্ষা করে কোনও অনুষ্ঠান করলে যদি কোনও ধরনের নাশকতা ঘটে, তাহলে তার দায় আমাদের দেওয়া হবে। সেই দায় আমরা নেব না। আমরা চাই না অনুষ্ঠানটি একেবারেই বন্ধ হয়ে যাক। আমরা এখনও অপেক্ষা করছি। দেখি কী হয়।
/এমএনএইচ/