সনদ জালিয়াতি: মালিহা গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৫ বিশ্ববিদ্যালয়কে ইউজিসির নোটিশ

 

মালিহা গ্রুপের অফিসসনদ জালিয়াত চক্র ‘মালিহা গ্রুপ’-এর বিরুদ্ধে বেসরকারি ৫ বিশ্ববিদ্যালয় কোনও ব্যবস্থা নিতে ৫ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোক নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একইসঙ্গে এই ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, পিপলস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ও উত্তরা  ইউনিভার্সিটি। ১১ জুলাই এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ইউজিসি। বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপ-পরিচালক জেমিন পারভিন।

এর আগে গত ১৯ জুন বাংলা ট্রিবিউনে ‘সুলভ মূল্য স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বিক্রি করছে মালিহা গ্রুপ’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলে ইউজিসির টনক নড়ে। এরপরই ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গৃহীত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠি দেয় ইউজিসি।

প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, রাজধানীর বাড্ডায় অফিস খুলে মালিহা গ্রুপ নামের প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি সাউদার্ন, পিপলস, আমেরিকা বাংলাদেশ, এশিয়ান ও উত্তরা ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট বিক্রি করছে। জনসাধারণের মোবাইলে মেসেজ দিয়ে, মোবাইলে কল দিয়ে এমনকি রাস্তার পাশে লিফলেট বিতরণ করেও ক্লায়েন্ট ধরার চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর পরই ২০ জুন আবারও সরেজমিনে মালিহা গ্রুপে অফিসে গেলে তাদের অফিস বাইরে থেকে তালাবন্ধ পাওয়া যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০ দিন বন্ধ রাখার পর প্রতিষ্ঠানটি ফের  চালু করে মালিহা গ্রুপের প্রতারক চক্রটি।

জিয়াউর রহমান নামের ফেসবুক আইডি

এদিকে চিঠি পাঠানোর পরে গত সপ্তাহ পর্যন্ত শুধু পিপলস ইউনিভার্সিটি উত্তর দিয়েছে বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপ-পরিচালক জেমিন পারভিন।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে এ বিষয়ে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী চক্রটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে’। 

এদিকে মালিহা গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেওয়া প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্টার ড. মনতাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মালিহা গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আমরা সব কাগজপত্র আইনজীবীকে দিয়েছি। শিগগিরই কোর্টে মামলা করা হবে’।

এদিকে অনুসন্ধানে মালিহা গ্রুপের এমডি ড. মো. জিয়াউর রহমানকে ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তার ফেসবুকে দু’টি আইডি রয়েছে। আইডি দু’টিতে দু’টি নাম ব্যবহার করেন তিনি। একটি এমডি জিয়াউর রহমান,  অন্যটি সোহেল রহমান (পিএইচডি) নামে রয়েছে।

তার ফেসবুকেও পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে। যদিও সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরের কোনও পদ নেই। এমনকি জিয়াউর রহমান নামে কোনও কর্মকর্তাও সেখানে চাকরি করেন না।  এ বিষয়ে জিয়াউর রহমানের ফেসবুকে মেসেজ দিলেও তিনি কোনও রিপ্লাই দেননি।

আরও পড়ুন: সুলভ মূল্যে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বিক্রি করছে মালিহা গ্রুপ (ভিডিও)!

/এমএনএইচ/