রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দলীয় কাজে ব্যবহার করা ষড়যন্ত্র: এমাজউদ্দীন আহমদ

বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক এমাজদ্দীন আহমদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন, ঐক্য প্রক্রিয়া ষড়যন্ত্র নয়, রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দলীয় কাজে ব্যবহার করা ষড়যন্ত্র।

মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত এক স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

এমাজউদ্দীন বলেন,‘গত ৮-৯ বছরে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে লোকজন নিয়োগ হয়েছে মেধার ভিত্তিতে নয়, দলের নেতার প্রতি অনুগত হওয়ার জন্য প্রতিটি নিয়োগ হয়েছে। এজন্য আমরা প্রশাসনের দিকে তাকালে দেখতে পাই, তারা হয়তো ভুলে গেছেন, তারা রাষ্ট্রের কর্মকর্তা, কোনও দলের না, কোনও সরকারের কর্মকর্তা তারা নয়। রাষ্ট্রের জনগণের কষ্টে অর্জিত অর্থ দিয়েই তাদের বেতন দেওয়া হয়। জনকল্যাণে, রাষ্ট্রের কল্যাণ কাজে তাদের সংশ্লিষ্ট থাকার কথা। ক্ষমতাসীন দল ঐক্য প্রক্রিয়াকে ষড়যন্ত্র বলতে চাচ্ছে। আমি বলবো, ষড়যন্ত্র ওইটা না। ষড়যন্ত্র হলো রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দলের কাজে ব্যবহার করা।’

এই ষড়যন্ত্র যতক্ষণ পর্যন্ত আছে, ততক্ষণ কষ্ট সহ্য করতে হবে উল্লেখ করে এমাজউদ্দীন বলেন, ‘এই ষড়যন্ত্রকে মুছে ফেলার জন্য প্রয়োজন হবে জাতীয় পর্যায়ে ঐক্য। যার সূচনা হয়েছে, কিন্তু সমালোচনা করার দরকার নেই। প্রয়োজন হলে আত্মসমালোচনার জায়গা আছে যে, জাতির কল্যাণে আমরা কতটুকু অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছি, এদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। ’

এই মুহূর্তে আমরা জাতীয় পর্যায়ের মস্ত বড় সংকটের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করছি দাবি করে এমাজউদ্দীন বলেন, ‘এই সংকট থেকে উত্তরণের একাধিক পথ নেই। বাংলাদেশের জনগণ অতীতেও এরকম সংকট অতিক্রম করেছিল একাধিকবার। নিজেদের আত্মবিশ্বাস নিয়ে যা ন্যায়, যা গ্রহণযোগ্য তার জন্য উঠে দাঁড়ানো এই মুহূর্তে সবচেয়ে প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘এই সংকট তৈরি হলো কী করে? দুটো বড় কারণ আছে, এই দুটো বড় কারণেই আওয়ামী লীগ এই সংকটের জন্ম দিয়েছে ‘

এই সরকার মস্ত বড় প্রশ্নবোধক কাজ করে চলেছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, গত ৮-৯ বছরের মধ্যে দল এবং সরকারের মধ্যে যে পার্থক্য, তা মুছে ফেলা হয়েছে।  রাষ্ট্র, সরকার এবং দলের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে আমি রাষ্ট্রের সমালোচনা করতে পারি না, কিন্তু আমি সরকারের সমালোচনা করতেই পারি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেখানে গণতন্ত্র আছে, সেখানে সরকারের সমালোচনা করার জন্য বিরোধী দল আছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দল  সম্পূর্ন ভিন্ন। কিন্তু রাষ্ট্রের কর্মকর্তা দলীয় কাজে সম্পৃক্ত হবে, এটা মোটেও কাম্য নয়।’

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কর্নেল (অব) আনোয়ারুল আজিম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলাম, সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।