জানা গেছে, বলধা গার্ডেনের ভেতরে পানির পাম্প স্থাপনের জন্য প্রায় ১২শ স্কয়ার ফিট জায়গা দেওয়া হয় ঢাকা ওয়াসাকে। ১৯৮১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তিতে শর্ত ছিল, ওয়াসা প্রতিদিন ১০ হাজার গ্যালন পানি দেবে গার্ডেনে। আর সে পানিই দেওয়া হয় গার্ডেনে থাকা গাছপালায়।
সূত্র জানায়, গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে বলধা গার্ডেনে পানি সরবরাহ বন্ধ করে ওয়াসা। এতে গাছপালায় পানি দেওয়া নিয়ে বিপত্তির মধ্যে পড়েন গার্ডেন কর্তৃপক্ষ। পানি সরবরাহ চালু রাখতে দুই দফায় চিঠি দিয়েও সমাধান হয়নি বলে জানান গার্ডেন কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর ও ৫ ডিসেম্বর পানি সরবরাহ চালু রাখার জন্য ওয়াসায় চিঠি দেন গার্ডেনের পরিচালক। তবে সে চিঠির কোনও জবাব দেয়নি ওয়াসা।
পানির পাম্প পুরনো হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন ধরে এক জায়গা থেকে পানি তোলার কারণে এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ঢাকা ওয়াসার মডস জোন ১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ শিহাবুর রহমান। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ পাম্প থেকে আগে প্রতি ঘণ্টায় ৩ হাজার লিটার পানি তোলা সম্ভব হতো। কিন্তু এখন ৬০০ লিটারের বেশি পানি তোলা যাচ্ছে না। এ কারণে এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
শিহাবুর রহমান আরও বলেন, পুরাতন পাম্পটি সরিয়ে নতুন পাম্প বসাতে পারলে এ সংকট সমাধান করা সম্ভব। নতুন পাম্প বসাতে হলে যন্ত্রপাতি ও পাম্প স্থাপনের জন্য জায়গা প্রয়োজন। কিন্তু বলধা গার্ডেন কর্তৃপক্ষ সেটি দিচ্ছেন না। আমরা তাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছি, পাম্প স্থাপন কাজের জন্য বর্তমান জায়গার পাশে অতিরিক্ত জায়গা সাময়িকভাবে বরাদ্দ দিতে। পাম্প স্থাপন কাজ শেষ হলে জায়গা ছেড়ে দেবো। কিন্তু এখনও আমরা সে বিষয়ে কোনও সমাধান পাইনি।
প্রসঙ্গত, ১৯০৯ সালে বলধার জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী বলধা গার্ডেনের সূচনা করেন। ১৯০৯ সাল থেকে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত তিনি ৫০টি দেশের ফুল ও অন্যান্য উদ্ভিদ এনে এ গার্ডেনটিতে রোপণ করেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ উদ্যানের জয় হাউসে বসে এখানকার ক্যামেলিয়া ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তার বিখ্যাত ‘ক্যামেলিয়া’ কবিতাটি লিখেছিলেন।