আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ন্যূনতম মানবিক সুবিধা নেই: নঈম গওহর

মমমম]ৎসংরক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নঈম গওহর ওয়ারা। তিনি বলেছেন, ‘সরকার সম্প্রতি নতুন সাত হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু, সংরক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে এসব ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে ন্যূনতম মানবিক সুবিধা পাওয়া যায় না। যে কারণে দুর্যোগের সময় মানুষ সেখানে যেতে চায় না।’

বুধবার (৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে উপকূলীয় নাগরিক সমাজ সংগঠন কোস্ট আয়োজিত ‘দুর্যোগের পূর্বে অতি প্রস্তুতি ও দুর্যোগের পরদিন সব ভুলে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসুন: দুর্যোগ মোকাবিলায় চাই স্থায়িত্বশীল ও স্থানীয় সক্ষমতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরকারি হিসাবে একজন মানুষের জন্য সর্বোচ্চ ২ বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ রয়েছে। সেখানে একজন মানুষের পক্ষে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান করা সম্ভব না। একটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যয় দিয়ে উপকূলে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সক্ষম অন্তত ৩৫টি দোতলা বাড়ি নির্মাণ করা সম্ভব। এসব বাড়ি হস্তান্তর করে দিলে বাড়ির অধিবাসীরা নিজেরাই যেমন এর যত্ন করতে পারবে, তেমনি দুর্যোগে প্রতিবেশীকে আশ্রয়ও দিতে পারবে।’

নঈম গওহর ওয়ারা বলেন, সরকার ঘূর্ণিঝড়ের আগে মানুষের প্রস্তুতির কথা বলেন, কিন্তু অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঘূর্ণিঝড় নিয়ে কোনও প্রস্তুতি নেই। যেমন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতো প্রতিষ্ঠানের সারা বছর ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ফণীর ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য আট হাজার কিলোমিটারের মতো বেড়িবাঁধ সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, যা হয়নি।

বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশনের নির্বাহী প্রধান এএইচএম বজলুর রহমান বলেন, বাণিজ্যিক এফএম রেডিওগুলো সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী ১০ কিলোওয়াট পর্যন্ত সম্প্রচার ক্ষমতা সুবিধা পাচ্ছে। অথচ অলাভজনক কাজে নিয়োজিত কমিউনিটি রেডিও যারা জনগণের তথ্য সেবায় নিয়োজিত তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ২৫০ ওয়াট। এই ক্ষমতা দিয়ে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত সম্প্রচার করা যায়। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড়েরর সময় তারা যাতে অন্তত ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত সম্প্রচার করতে পারে সেজন্য তাদের সম্প্রচার ক্ষমতা ১০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। ঘূর্ণিঝড় ফণীর সময় ৮টি উপকূলীয় কমিউনিটি রেডিও দিন রাত চালু থেকে মানুষকে তথ্য সেবা প্রদান করেছে। সমুদ্রগামী জেলে নৌকায় স্বল্প মূল্যের ভিএইচএফ বা ইউএইচএফ রেডিও প্রদান করা গেলে তারা ঘূর্ণিঝড় বা অন্যান্য বিপদের সময় গভীর সমুদ্র থেকেও উপকূলে যোগাযোগ করতে পারে।

আলোচনা সভায় কোস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি বদরুল আলম, কোস্ট ট্রাস্টের উপপরিচালক সৈয়দ আমিনুল হক এবং কোস্ট ট্রাস্টে সহকারী পরিচালক বরকত উল্লাহ মারুফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।