সৎ-যোগ্যরাই নতুন কমিটিতে প্রাধান্য পাবেন: হানিফ

মাহবুবউল আলম হানিফআওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সব সময়ই সৎ, যোগ্য, জনপ্রিয় ও স্বচ্ছ ইমেজসম্পন্নদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। দলের আসন্ন সম্মেলনেও এই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন থাকবে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনের প্রস্তুতি তদারকি করার ফাঁকে তিনি এ সাক্ষাৎকার দেন।
আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক এই উদ্যানে আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, দেশব্যাপী যে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে তার ধারাবাহিকতা আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনেও থাকবে। অধিকতর স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে।
হানিফ এ নিয়ে টানা তিনবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। টানা তিনবারের সংসদ সদস্যও তিনি। করেছেন ছাত্ররাজনীতি। রাজনৈতিক জীবনে স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির অধিকারী হানিফ ব্যক্তি জীবনেও ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। 
সম্মেলনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে হানিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সম্মেলনের সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। শোক প্রস্তাব, সাংগঠনিক রিপোর্ট চূড়ান্ত। গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্রের খসড়াও চূড়ান্ত করা হয়েছে। সাজসজ্জা ও শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা চলছে। সম্মেলনমঞ্চ এদিন সন্ধ্যার মধ্যেই প্রস্তুত হয়ে যাবে। কাউন্সিলর ডেলিগেটদের তালিকা চূড়ান্ত করে জেলায় পাঠানো হয়েছে।
তরুণদের বেশি হারে কমিটিতে আসার আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে হানিফ বলেন, সেটা এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। তবে আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য অনুযায়ী নবীন ও প্রবীণ মিলিয়েই কমিটি হবে। প্রবীণদের অভিজ্ঞতা আর নবীনদের কর্মদক্ষতা ও গতি মিলিয়ে দলকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তোলা হয়। এবারও হয়তো সেটাই হবে।
সাধারণ সম্পাদক পদে অনেক জুনিয়রদের নাম গণমাধ্যমে আসার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, গণমাধ্যমে নাম আসলেই কেউ দলের সাধারণ সম্পাদক হয়ে যাবেন না বা কোনও পদ-পদবিও নিশ্চিত হবে না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পদ নির্বাচিত হয় দলের সভাপতিকে দেওয়া কাউন্সিলরদের ক্ষমতাবলে। দলের সভাপতি দক্ষতা, যোগ্যতা, সততা বিবেচনায় নিয়ে যোগ্যতমদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দিয়ে থাকেন।
তিনি বলেন, অনেক সময় গণমাধ্যমের প্রসার বাড়াতে দলে কে আসছেন, কে বাদ যাচ্ছেন— এরকম লেখা হয়ে থাকে। এগুলো কিছুটা কাল্পনিকও হতে পারে, যেগুলোর সঙ্গে বাস্তবতার খুব একটা মিল নেই। কে দলের সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন, সেটা আগে যদি কেউ জেনে থাকেন, তা কেবলমাত্র দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানতে পারেন। দলকে ভবিষ্যতে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবেন, কাউন্সিলরদের দেওয়া ক্ষমতাবলে এমন ব্যক্তিকেই তিনি নির্বাচিত করে থাকেন।
হানিফ বলেন, এদেশের যা কিছু অর্জন তা আওয়ামী লীগের হাত ধরেই। মুক্তিযুদ্ধ, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি, দারিদ্র্যজয়, আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস, সমুদ্র বিজয়, শান্তিচুক্তি— সব অর্জন আওয়ামী লীগ সরকার বা দলের হাত ধরে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ সব আশা-আকাঙ্ক্ষাও আওয়ামী লীগের প্রতিই। আর সে কারণেই আওয়ামী লীগকে মানুষের কল্যাণের জন্য তৈরি করা করা হয়, যাতে এদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে পারে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, আমরা আশা করি, এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাংলাদেশ, একটি স্বনির্ভর-সমৃদ্ধ ও আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলাই হবে মূল লক্ষ্য। একটি সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে দিনরাত পরিশ্রম ও নিরলস প্রচেষ্টা, এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা সে লক্ষ্যের দিকে আরও এগিয়ে যাবো।