X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১
ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালকের সাক্ষাৎকার

‘ঢাকার সব পরিবহন এক ছাতার নিচে আনার কাজ চলছে’

জুবায়ের আহমেদ
১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:১৪

বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চলের জন্য সমন্বিত, টেকসই ও আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য ২০১২ সালে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) প্রতিষ্ঠা করে সরকার। জনসাধারণের জন্য নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য ও সহজলভ্য পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা এর উদ্দেশ্য। এ জন্য পরিবহন ব্যবস্থায় সুষ্ঠু সমন্বয়, পরিবহন পরিকল্পনা এবং সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তন ডিটিসিএ’র লক্ষ্য।

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের কর্মপরিকল্পনা, প্রতিবন্ধকতা ও বাস্তবতা নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপ হয় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীনের। আলাপকালে তিনি তুলে ধরেন ঢাকায় অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা পরিবহন ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে কতটা সচেষ্ট ডিটিসিএ।

ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন বলেন, ঢাকা অঞ্চলের জন্য পরিকল্পিত আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে সরকার অনুধাবন করেছে, সড়কের সব উপাদানগুলোর মধ্যে একটি সমন্বয় প্রয়োজন। কারণ রাস্তাঘাট সব আছে, কিন্তু পরিবহন ব্যবস্থা ভালো না। আবার পরিবহন যাতায়াত করছে, কিন্তু সঠিক সড়ক বা ট্রাফিক ব্যবস্থা নেই। এই সব কিছুর সমন্বয়ে পরিবহন ব্যবস্থাটা যেন আধুনিক, যুগোপযোগী ও জনবান্ধব হয় তার জন্যই ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। আমরা চাই ঢাকার সব পরিবহন এক ছাতার নিচে আসুক।

বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক জুবায়ের আহমেদের সঙ্গে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন

সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনার (আরএসটিপি) আওতায় ঢাকা মহানগরে ২০১৫ থেকে ২০৩৫ পর্যন্ত কোথায় রাস্তা দরকার হবে এবং তা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে– এর পরিসংখ্যানগত পরিকল্পনা ডিটিসিএ করে থাকে আবেদনের ভিত্তিতে। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী সরকারের বিনিয়োগ হবে। এসব কিছুরই ডকুমেন্টস ডিটিসিএতে থাকবে এবং তা আপডেট হবে। ইতোমধ্যে সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনায় কয়েকটি গবেষণা ও এর পরীক্ষামূলক বাস্তবায়ন হয়েছে জানিয়ে সাবিহা পারভীন বলেন, ল্যান্ড ইউজ প্ল্যানের সঙ্গে ট্রান্সপোর্টেশন প্ল্যানের একটা সম্পর্ক আছে। সেক্ষেত্রে কেউ যদি কোনও এলাকায় মার্কেট বা আবাসন গড়ে তুলতে চান তাহলে সেখানে যে রাস্তাঘাট হবে এবং যানচলাচল করবে তার সম্ভাব্যতা আমরা যাচাই করি।

সড়কে নতুন কোনও পরিবহন ব্যবস্থার সম্ভাব্যতা ডিটিসিএ থেকে করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি যে মেট্রোরেল নির্মাণ হয়েছে তার সম্ভাব্যতা যাচাই আমরাই করেছি। এছাড়া ঢাকায় গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে বাস রুট রেশনালাইজেশন করা হয়েছে ডিটিসিএ এর তত্ত্বাবধানে।

এক্ষেত্রে রুট কয়টা হবে, বাসের ধরন কী হবে, ডিজাইন কী হবে সবই বেরিয়ে আসবে ডিটিসিএ’র গবেষণার মধ্য দিয়ে। আমরা ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে কাজ করেছি। এবার যে ফলাফল এসেছে তার ভিত্তিতে সরকার কাজ করবে। প্ল্যানিংয়ে যত সময় দেবেন তত ভালো রেজাল্ট পাবেন। সেটা নিয়ে ডিটিসিএ কাজ করছে। এছাড়া রিং রোড, আউটার রিং রোড নিয়ে গবেষণা হচ্ছে আমাদের এখানে। যেন ঢাকার ভেতর না ঢুকেই বড় যানগুলো পাশ দিয়ে চলে যেতে পারে। সেই এলাইনমেন্ট ঠিক করা হচ্ছে।

সাবিহা পারভীন

চট্রগ্রাম মেট্রোরেল ও চট্রগ্রাম ট্রান্সপোর্ট মাস্টার প্ল্যান ডিটিসিএ করছে জানিয়ে সাবিহা পারভীন বলেন, যদিও আমাদের কেবল ঢাকার ট্রান্সপোর্ট নিয়ে কাজ করার কথা, তবুও ডিটিসিএ’র এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা আছে। তাই সরকার কাজটি আমাদের দিয়েছে।

নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিয়েও ডিটিসিএ কাজ করছে। শহরের মধ্যে সড়ক নির্মাণে কোন কোন বিষয়গুলো পরিকল্পনায় রাখতে হবে সে বিষয়ে একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে পরিবহন সমন্বয় নিয়ে কাজ করা সংস্থাটি। এবিষয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমরা একটা গাইডলাইন বের করেছি সিটি এরিয়ায় কী ধরনের রোড হলে জনগণের নিরাপত্তাটা নিশ্চিত হবে। আমারা ঢাকার সিটি করপোরেশনগুলোতে এই গাইডলাইন পাঠিয়েছি। আমাদের ওয়েবসাইটে এই গাইডলাইন আছে। কেউ যদি শহরের মধ্যে নিরাপদ সড়ক বানাতে চায় আমাদের গাইডলাইন ফলো করলে তা সম্ভব হবে। বেসরকারিভাবে কেউ সড়ক গবেষণা সহয়তা চাইলে তাও দেওয়া হয় ডিটিসিএ থেকে।

ডিটিসিএ-তে রয়েছে কিছু প্রতিবন্ধকতা

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ কাজের ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছে। এবিষয়ে ডিটিসিএ’র নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিহা পারভীন বলেন, এই সংস্থাটির এখনও তেমন পরিচিতি নেই। এছাড়া গবেষণাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় আমাদের সীমাবদ্ধতা আমরা যেকোনও সমস্যা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কেবল জানাতে পারি। কিন্তু তা কাউকে মানাতে বাধ্য করার এখতিয়ার আমাদের নেই। উদাহরণ হিসেবে বললে, আমাদের নতুন কোনও পলিসি হয়তো ঢাকার পরিবহন মালিকদের মতের সঙ্গে মিললো না। ফলে তারা তা এড়িয়ে যান। তখন গবেষণা করে ফল বের করলেও তা বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ে।

ডিটিসিএ’র ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রটা এখনও পিছিয়ে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে যারা কাজ করবে তাদের চাকরির নিশ্চয়তা দিতে হবে। তাদের বেতন কাঠামোও সাধারণের মতো দেখলে হবে না। কেননা এখানের সবাই গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আর গবেষকরা তো অন্য কোনও কিছু নিয়ে ভাববে না। তাই তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারলে ভালো গবেষণা পাওয়া সম্ভব। সরকার এই ভবনটি তৈরি করে দিয়েছে। তবে আরও কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। আইনগত কিছু সুবিধা দিতে হবে।

সফল প্রয়াস র‌্যাপিড পাস

র‌্যাপিড পাস ডিটিসিএ’র অন্যতম উদ্যোগ জানিয়ে সাবিহা পারভীন বলেন, র‌্যাপিড পাসটি আরও সর্বজনীন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এখন যেমন শুধু মেট্রোরেল ও বিআরটিসি বাসে ব্যবহার হচ্ছে। পরবর্তীতে নৌযান, বিআরটি সার্ভিস, গণপরিবহনে এই র‌্যাপিড পাস ব্যবহার করে জনসাধারণ যেন চলাচল করতে পারে সেই ব্যবস্থা করবো।

/এফএস/
সম্পর্কিত
মে দিবস: রাজধানীতে জনসভা করবে জাতীয় শ্রমিক লীগ
দূরপাল্লার বাসের জানালার পাশের যাত্রীদের ব্যাগ-মোবাইল ছিনিয়ে পালিয়ে যেত হৃদয়!
তীব্র গরমে বদলে গেছে আদালতের চিরচেনা চিত্র
সর্বশেষ খবর
‘কলা চুরি’ নিয়ে বিতর্কের জেরে স্কুলছাত্রকে হত্যা: ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
‘কলা চুরি’ নিয়ে বিতর্কের জেরে স্কুলছাত্রকে হত্যা: ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
আন্তর্জাতিক মুক্তির আগেই বাংলাদেশে!
আন্তর্জাতিক মুক্তির আগেই বাংলাদেশে!
নির্বাচনে অনিয়ম হলে কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে: ইসি হাবিব
নির্বাচনে অনিয়ম হলে কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে: ইসি হাবিব
১৭ অঞ্চলের তাপমাত্রা আজও ৪০ ডিগ্রির ওপরে, বেশি আর্দ্রতায় অস্বস্তি চরমে
১৭ অঞ্চলের তাপমাত্রা আজও ৪০ ডিগ্রির ওপরে, বেশি আর্দ্রতায় অস্বস্তি চরমে
সর্বাধিক পঠিত
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
আওয়ামী লীগ নেতাকে হারিয়ে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা রউফ জয়ী
আওয়ামী লীগ নেতাকে হারিয়ে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা রউফ জয়ী
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
ট্রাকের চাকায় পিষে দেওয়া হলো ৬ হাজার কেজি আম
ট্রাকের চাকায় পিষে দেওয়া হলো ৬ হাজার কেজি আম
সিএনজির রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করতে বিআরটিএ অফিস ঘেরাও
সিএনজির রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করতে বিআরটিএ অফিস ঘেরাও