আজও স্কুলগুলোর সামনে অভিভাবকদের জটলা

তিনদিন অতিবাহিত হচ্ছে স্কুল-কলেজ খোলার। এরই মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালিত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। স্কুলে ঢোকার মুখে রাখা হয়েছে তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা, আছে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও। এছাড়া হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। শিক্ষার্থীদের কারও তাপমাত্রা ১০১ ডিগ্রির বেশি পেলে তাদের অভিভাবককে ডেকে ওই শিক্ষার্থীকে ‘বিশ্রামে’ থাকার পরামর্শ দিচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফটকে অভিভাবকদের ভিড় না করার জন্যও বারবার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। কিন্তু তৃতীয় দিনেও অভিভাবকদের জটলা কমেনি। এমনকি ফটকে এখনও পসরা সাজিয়ে বসছেন ফেরিওয়ালারা।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যতটুকু সম্ভব অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যেন অভিভাবকরা বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণে সামনে অপেক্ষা না করেন; তাদের বাসায় চলে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। কিন্তু অনেক অভিভাবকই কথা মানছেন না। স্কুল ও কলেজ প্রাঙ্গণে সামনে অপেক্ষারত অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে। সরকারি নির্দেশনার বিষয়টিও অভিভাবকদের জানানো হয়েছে। সচেতনতা সৃষ্টির জন্য অভিভাবকদের সাথে কয়েকবার বৈঠক করেছে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী স্কুলটিতে সিডিউল করা হয়েছে। নিয়মিত এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ক্লাস অংশ নিচ্ছে। এ ছাড়াও অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন ক্লাস করছে। প্রতিদিনই যেসব শিক্ষার্থী আসছে তাদের ফুল-চকলেটসহ বিভিন্ন উপহার দিয়ে বরণ করে নেওয়া হচ্ছে। 

মিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন সুলতানা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দিবা এবং প্রভাতী শাখাকে আমরা চারটি ধাপে বিভক্ত করেছে। প্রতি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসাচ্ছি, যাতে করে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে। তবে অভিভাবকরা যেন বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণে সামনে ভিড় না জমায় সে বিষয়ে আমরা অভিভাবকদের সচেতনতা বিষয়টি তাদের কাছে তুলে ধরছি।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্কুলমুখী হতে পেরে তারা মানসিকভাবে আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো রয়েছে। বাসার বন্দি দশা থেকে তারা মুক্তি পেয়েছে। সশরীরে ক্লাসে অংশ নিতে পেরে তাদের মুখে ছিল আনন্দের ছাপ। এই আনন্দ নিয়েই ক্লাস করছে তারা, অনেকদিন পরে ছাত্র-ছাত্রীদের পেয়ে শিক্ষকরাও আবেগাপ্লুত।

অভিভাবকদের-জটলা-2

স্কুল থেকে বেরিয়েই দেখা মেলে অভিভাবকদের, তারা ক্লাস শেষে বাচ্চাদের বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন স্কুলের সামনে। আর এই জটলাকে উপলক্ষ স্কুলের সামনে পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুসকা, বাদামসহ হরেক রকম ফেরিওয়ালারা। শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের অনেকেই সেই সব দোকান ঘিরে ধরে সেসব খাবার খাচ্ছেন। এ বিষয়গুলো নজরদারির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও তৎপরতা দেখা মেলেনি।

মিরপুরের মনি কানন স্কুল উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আব্দুল হাই বিভিন্ন ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ করছেন। পরে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের উপর চাপ আছে। এর পাশাপাশি সীমিত পরিসরের ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম কীভাবে গতিশীল করা যায় সেটা নিয়েও কাজ করে যেতে হচ্ছে। আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দিচ্ছি, সবকিছু তো আর একদিনে করা সম্ভব নয়, একটু সময় লাগবে।