ঈদের ছুটিতে র‍্যাবের টহল হবে দৃশ্যমান

আসন্ন ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকাসহ বড় শহরগুলোয় জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) টহল হতে হবে দৃশ্যমান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নাগরিকরা যেন এ সময়ে নিশ্চিন্তে মুভমেন্ট করতে পারে তাই এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দৃশ্যমান রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে র‍্যাবের মোটরসাইকেল স্কোয়াডের রাত্রিকালীন টহলও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আসন্ন ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে সমগ্র দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, ঈদের ‌আগে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ ও ছুটি প্রদান, সড়ক-মহাসড়ক নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখাসহ অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ে গত ১৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভায় বলা হয়েছে, দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।

এ সময় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে ইউনিফরমধারী পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য মোতায়েন, বিশেষ বিশেষ রাস্তায় ও মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন, টাকা হস্তান্তরে মানি এস্কর্ট প্রদান, জাল টাকার বিস্তার রোধ, নৌপথে শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম গ্রহণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে ওই সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিবরা অংশ নিয়েছিলেন। এর সঙ্গে পুলিশের আইজি, র‍্যাবের মহাপরিচালক, আনসারের মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনার, এসবি, হাইওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশ, শিল্প পুলিশসহ বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, সড়ক পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জানানো হয়েছে, ঈদুল ফিতরের সময় রাজধানীর কূটনৈতিক পাড়া ও তৎসংলগ্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং বন্দরে পুলিশের টহল জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ সময় র‍্যাবের টহলও জোরদারের পরামর্শ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

একই সঙ্গে আলাদা এক অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার রাজধানীবাসীকে সতর্কতা অবলম্বন করে বাসা-বাড়ি নিরাপদ রেখে রাজধানী ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি সংসারের গুরুত্বপূর্ণ ও দামি জিনিসপত্র যারা ঈদের সময় রাজধানী ছেড়ে যাবে না এমন নিকটাত্মীয়ের বাসায় রেখে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন। 

জানা গেছে, শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশেই ঈদের সময় নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিশ্চিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এ দায়িত্বটি পালন করবেন। গত দুবছর করোনার কারণে সরকারকে সারা দেশের পাশাপাশি রাজধানীতে নিরাপত্তা নিয়ে ততটা ভাবতে হয়নি। কারণ, মানুষ গ্রামে যায়নি। কিন্তু এ বছরের চিত্র ভিন্ন। গত দুবছর রাজধানীতে ঈদ কাটাতে গিয়ে অনেকটাই হাঁপিয়ে উঠেছেন অনেকে। তাই এবছর করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় অধিকাংশ মানুষ নাড়ির টানে শেকড়ের সন্ধানে গ্রামে গেছেন এবং যাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত রেজাউল ইসলাম জানিয়েছেন, গত দুই বছর ঈদে-কোরবানিতে রাজধানী ছেড়ে গ্রামে যাওয়া হয়নি করোনার কারণে। এবার সন্তানদের দাবি ফেলতে পারিনি। তাই গ্রামে যাচ্ছি অনেকটাই আল্লাহর ওপর ভরসা করে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে পুলিশের পক্ষ থেকে যা বলা হচ্ছে তার ওপরও আস্থা আছে, তাই যাওয়া। 

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জনসাধারণের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও মাঠে কাজ করবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, কোনও ধরনের হুমকি নেই। তার পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় নেই কোনও ঘাটতি।