৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডারের বৈষম্য কমানোর দাবিতে মানববন্ধন

ঘোষিত ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার বিজ্ঞপ্তিকে প্রহসনমূলক অ্যাখ্যা দিয়ে এটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ওই বিসিএসের ফলপ্রত্যাশীরা। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি তুলে ধরেন তারা।

একই সঙ্গে বর্তমান চয়েজ লিস্ট বাতিল করে অধিকসংখ্যক প্রার্থীর চাকরির সুপারিশের ব্যবস্থা করতে এবং আগের বিসিএসগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বৈষম্য হ্রাস করতে দাবি জানিয়েছেন তারা।

মানববন্ধনে ফল প্রত্যাশীরা বলেন, আমরা ৪৩তম বিসিএস ফলপ্রত্যাশীরা অন্য বিসিএসগুলোর তুলনায় মারাত্মক বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। প্রত্যেক চাকরিপ্রত্যাশী দীর্ঘ বিসিএস জার্নি শেষ করে একটি চাকরি পাওয়ার অপেক্ষায় থাকেন। এত দিন এই অপেক্ষার সুমিষ্ট ফল পাওয়া যেতো। ক্যাডার না পেলেও নন-ক্যাডারে পাওয়া চাকরির মাধ্যমে পরিবারের মুখে ফুটতো হাসি। অথচ ৪৩ বিসিএসে সেই পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার বিজ্ঞপ্তি দেখে হতাশ ও উদ্বিগ্ন।

তারা আরও বলেন, ৩৮তম বিসিএসে নন-ক্যাডার থেকে ২ হাজার ৯৬৫ জনকে সুপারিশ করা হয়েছিল। এরপর এটিকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য ৪০তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ নেয় পিএসসি। ওই বিসিএসে নন-ক্যাডারের জন্য ৪ হাজার ৪৭৮ পদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়, যেখান থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত হন ৩ হাজার ৬৫৭ জন। ৪১তম বিসিএসে নন-ক্যাডারের বিজ্ঞপ্তি ছিল ৪ হাজার ৫৩ জন যেখান থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত হন ৩ হাজার ১৬৪ জন। বাকি পদগুলো যোগ্য প্রার্থীর অভাবে ফেরত যায়, যেগুলো মূলত টেকনিক্যাল পদ। আর ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার বিজ্ঞপ্তিতে মাত্র ১ হাজার ৩৪২টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে জেনারেল প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ আছে মাত্র ৩৬০টি পদ, যা নজিরবিহীন। শুধু তা-ই নয়, ৩৬০টি জেনারেল পদের মধ্যে ২৭৯টি পদ ১২ গ্রেডের। ১৫০০ নম্বরের বিসিএস পাস করে ১২ গ্রেডের চাকরিও হচ্ছে না।

বৈষম্যের ব্যাখ্যা দিয়ে ফলপ্রত্যাশীরা আরও বলেন, ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডারের ১ হাজার ৩৪২ পদের মধ্যে ৮৮৮টি পদই ৪১তম থেকে ফেরত আসা পদ। অর্থাৎ ওই বিসিএসে যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় সেগুলো খালি ছিল, যা ৪৩বিসিএসে দেওয়া হয়েছে। সে হিসাবে আমাদের জন্য নতুন পদ এসেছে মাত্র ৪৫৪টি৷ আমরা কোনোভাবেই এটা মানতে পারছি না। আমরা পিএসসিকে সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানাচ্ছি।

এর আগে কখনও ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার ফল একসঙ্গে প্রকাশ করা হয়নি জানিয়ে তারা আক্ষেপ করে বলেন, এবার পিএসসি একসঙ্গে ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে নন-ক্যাডারের পদ অপ্রত্যাশিত হারে কমে গেছে। নন-ক্যাডারের এত কম পদের কারণে তিন বছর অপেক্ষা করে থাকা প্রার্থীরাই শুধু হতাশ হবেন না, হতাশ হবে তাদের প্রত্যেকের পরিবার। এতে বেকারত্বও বাড়বে।