খতনা করাতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু

রিমান্ড-জামিন নামঞ্জুর, দুই চিকিৎসককে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

রাজধানীর মালিবাগের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে আহনাফ তাহমিদ আয়হাম (১০) নামে এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার দুই চিকিৎসককের দুই দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত আসামির রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর এ আদেশ দেন।

আসামিরা হলেন, জে এস হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক এস এম মুক্তাদির ও চিকিৎসক মাহাবুব মোরশেদ।

আজ বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক রুহুল আমিন আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিক্যাল চেকআপ সেন্টারে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আহনাফ তাহমিদ আয়হাম মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো।

শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানান, খতনা করাতে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে আয়হামকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার পর আর জ্ঞান ফেরেনি তার। তাদের অভিযোগ, লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার কথা থাকলেও ফুল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয় শিশুটিকে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ঘটনার পর যে চিকিৎসকের অধীনে ভর্তি করা হয়েছিল তিনি সেখান থেকে চলে যান।

এ ঘটনায় শিশুর বাবা মোহাম্মদ ফখরুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তিন জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে দুই চিকিৎসককে আটক করে পুলিশ।

শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিক্যাল চেকআপ সেন্টারে অভিযান চালিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এসময় এই সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে সিলগালা করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান জানান, শুধু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন ছিল প্রতিষ্ঠানটির। হাসপাতালের কার্যক্রমের কোনও অনুমোদন ছিল না। স্থায়ীভাবে এটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

 

আরও পড়ুন-

খতনা করতে গিয়ে আয়হামের মৃত্যু: মেডিক্যাল সেন্টার সিলগালা

খতনা করাতে গিয়ে আরেক শিশুর মৃত্যু: দুই চিকিৎসক আটক

শিশু আয়ানের মৃত্যু: তদন্তে নতুন কমিটি করে দিলেন হাইকোর্ট