শাহজালালের নিরাপত্তায় বিমানবাহিনীর ৮৫০ সদস্য

ঢেলে সাজানো হয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। এ জন্য বিমানবাহিনীর ৮৫০ জন সদস্য কাজ করছেন। দীর্ঘ সময় পর বিমানবাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্যের উপস্থিতি এখন বিমানবন্দরে। বিমানবাহিনীর এসব সদস্য এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স (অ্যাভসেক) নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।

বিমানবাহিনীর বাইরেও অ্যাভসেকের নিজস্ব প্রায় দেড় হাজার সদস্য রয়েছেন। বর্তমানে তিন শিফটে ডিউটিতে নিয়োজিত রয়েছেন তারা। বিমানবন্দরের বাইরে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিমানবন্দর ব্যবহারকারী সম্মানিত যাত্রীসহ পুরো নিরাপত্তায় বিমানবাহিনীর ৮৫০ সদস্য কাজ করছেন। এ ছাড়া নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন অ্যাভসেক, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।

তিনি আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনাকে ঘিরে আমাদের পূর্ণ নিরাপত্তা রয়েছে। যাত্রী সুরক্ষাসহ বন্দরের নিরাপত্তার কোনও ঘাটতি নেই।

বিমানবন্দরে যাত্রীরা (ফাইল ছবি)

সরেজিমনে দেখা গেছে, বিমানবন্দরের মূল সড়ক থেকে প্রবেশের সময় আনসার সদস্যের পাশাপাশি এপিবিএনের সদস্যরা কাজ করছেন। সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এ ছাড়া কার পার্কিংয়ের কয়েকটি পয়েন্টেও এপিবিএন সদস্যদের ডিউটি করতে দেখা গেছে।

এ ছাড়া টার্মিনাল ১ ও ২-এর গেটে আগে এপিবিএন সদস্যরা থাকলেও এখন আর তাদের দেখা যাচ্ছে না। এসব এলাকায় বিমানবাহিনীর সদস্য ও আনসারদের দেখা গেছে। টার্মিনাল ১ ও ২ দিয়ে আগমনী যাত্রী ও তাদের স্বজনরা ভিড় সামলাচ্ছেন তারা। দ্বিতীয় তলায় বহির্গমন গেটেও একই অবস্থা। সেখানে বিমানবাহিনী ও আনসার সদস্যদের দেখা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিমানবাহিনীর সদস্যরা বন্দরের অভ্যন্তরের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানেই নিয়োজিত রয়েছেন। এমনকি এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট এলাকায়ও রয়েছে তাদের অবস্থান।

সূত্র জানায়, আগে এসব স্থানে এপিবিএন সদস্যদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এখন নেই। এপিবিএন সদস্যরা শুধু বিমানবন্দরের বাইরে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে নিয়োজিত রয়েছেন। এর মধ্যে কেউ যেন পার্কিং ও রাস্তায় জটলা সৃষ্টি না করতে পারে, সেই কাজটিই তারা করে যাচ্ছেন।

বিমানবন্দরে বিদেশগামী প্রবাসী কর্মী (ফাইল ছবি)

আগে প্রায় তিন শিফটে ১ হাজার ১০০ সদস্য কাজ করলেও বর্তমানে কিছুটা কম দেখা যাচ্ছে।

অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্সের প্রধান উইং কমান্ডার জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিমানবাহিনীর পাশাপাশি অভসেকেরও প্রায় দেড় হাজার সদস্য রয়েছেন। অ্যাভসেকে বিভিন্ন বাহিনী থেকে আসা সদস্যরাই কাজ করেন।

তিনি আরও বলেন, আগে এপিবিএন সদস্যরা বন্দরের অভ্যন্তরে ডিউটি করতেন কিন্তু বর্তমানে তারা সেই স্থানগুলোয় নেই। বিমানবন্দরের বাইরে তাদের কর্তব্যের মধ্যে যেসব এলাকা রয়েছে, সেখানেই তারা ডিউটি করছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে এপিবিএন সদস্যসংখ্যা বেড়েছে। ক্রমেই তাদের পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন থাকবেন।

বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় প্রতিটি কর্মীই আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এখানে সম্মানিত যাত্রী থেকে শুরু করে এখানকার নিরাপত্তার কোনও ঘাটতি নেই। আমাদের এখন তিন শিফটে কাজ চলছে। তবে খুব শিগগিরই চার শিফট চালু হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সাল থেকে বিমানবন্দরে আর্মড পুলিশ ডিউটি শুরু করে। গত ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত বিমানবন্দরের প্রতিটি স্থানেই তাদের উপস্থিতি ছিল। কিন্তু পটপরিবর্তনের পর নানা কারণে নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় বিমানবাহিনী।