গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বলেছে, জনগণের সম্মতি ছাড়া করিডোর, বন্দর কিংবা আন্তর্জাতিক চুক্তির মতো জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। শুক্রবার (৯ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত কমিটির কার্যকরী সভায় এমন মন্তব্য করা হয়।
সভায় বক্তারা রাখাইন করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল বিদেশি মালিকানায় হস্তান্তরের উদ্যোগের তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, লাভজনক ও দক্ষভাবে পরিচালিত হবার পরেও তথাকথিত দক্ষতার অজুহাতে এই টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
সভায় ‘স্টারলিংক চুক্ত ‘ এবং ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজি আমদানির চুক্তিকেও’ স্বচ্ছতা ছাড়া করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। আরও বক্তব্য রাখেন ডা. হারুন-উর-রশীদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা সজীব তানভীর ও আকরাম খান, লেখক মাহা মির্জা, গবেষক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, মানবাধিকারকর্মী ফেরদৌস আরা রুমী ও কৌশিক আহমেদ, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের প্রতিনিধি রাফিউজ্জামান ফরিদসহ অন্যান্য সদস্যরা।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের সময় শ্রমিক অধিকারের অবনতিতে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়, টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকরা ঈদের বোনাস ও বকেয়া পরিশোধের দাবিতে আন্দোলন করলেও ৭ মে নির্ধারিত দিনেও পরিশোধ হয়নি। ৮ মে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে যৌথবাহিনী হামলা চালায়, এতে ২০ জনের বেশি শ্রমিক ও ছাত্র নেতা আহত হন।
শ্রমিক দমন ও গ্রেফতারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সভায় বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের রবিনটেক্স কারখানায় আন্দোলনের কারণে শ্রমিক নেতা সেলিম মাহমুদ ও সীমা আক্তারকে, রিকশা শ্রমিকদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় আল কাদেরী জয়সহ কয়েকজনকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেক্সিমকো কারখানা খোলার দাবিতে আন্দোলন করায় খোরশেদ আলম দুই মাস ধরে আটক রয়েছেন।
কমিটি আরও অভিযোগ করে, লেখক, শিল্পী, সাংবাদিকসহ বহু মানুষকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা মামলায় ট্যাগ করা হচ্ছে। পাইকারি হারে এই মামলার প্রবণতা, জুলাই গণহত্যার যথাযথ বিচার না করা—সবই ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের পথ তৈরি করছে।
সভা থেকে আগামী ২৩ মে ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়।