যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি’র তহবিল সংকোচনের ফলে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার উন্নয়ন পেশাজীবী চাকরি হারিয়েছেন। এ প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ঢাকায় আয়োজিত এক পরামর্শসভায় অংশ নেন প্রায় ১০০ জন ভুক্তভোগী, যারা ইউএসএআইডি’র প্রকল্প থেকে ছাঁটাই হয়েছেন বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সভায় বক্তারা জানান, চাকরি হারানোর পর তারা চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন এবং কোনও সহায়তা পাচ্ছেন না। অংশগ্রহণকারীরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন এই সংকটকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়ে জরিপের মাধ্যমে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয় এবং আয়কর ফেরতসহ প্রয়োজনীয় নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
চাকরি হারানো পেশাজীবী জিনাত আরা আফরোজ বলেন, ‘গত চার-পাঁচ মাসে ব্যাপক কর্মী ছাটাই হয়েছে। তবে, কতজন সরাসরি বা পরোক্ষভাবে চাকরি হারিয়েছেন, সে সম্পর্কে আমাদের পরিষ্কার ধারণা নেই। আমরা অনুমান করছি, যে এই সংখ্যা অনেক বেশি। তাই সরকারের উচিত অবিলম্বে একটি জরিপ পরিচালনা করে প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করা। কারণ চাকরি হারানো উন্নয়ন কর্মীদের প্রকৃত সংখ্যা না জানা থাকলে সরকারের পক্ষে আমাদের জন্য কোনও উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব নয়।’
আয়করের ক্ষেত্রে, চলতি বছরের আয় সমান থাকবে ধরে নিয়ে উৎসে কর কেটে নেওয়া হয়েছে, যা বর্তমান বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের উচিত আয়কর আইন-২০২৩ হালনাগাদ বা সংশোধন করে ইউএসএইড তহবিল সংকোচনের কারণে চাকরি হারানো উন্নয়ন পেশাজীবীদের জন্য জমাকৃত করের অর্থ ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা।’
সভায় বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. ইউএসএআইডি’র তহবিল সংকোচনের কারণে সৃষ্ট বেকারত্বের সরকারি স্বীকৃতি।
২. ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে জরিপ।
৩. আর্থসামাজিক প্রভাব মূল্যায়নে সরকারি উদ্যোগ।
৪. উৎসে কাটা আয়কর ফেরত প্রদানে নীতিমালা প্রণয়ন।
৫. উন্নয়ন খাতের পেশাজীবীদের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে স্বীকৃতি।
বক্তারা বলেন, দক্ষ উন্নয়ন পেশাজীবীদের অবমূল্যায়ন না করে রাষ্ট্রীয় কৌশল নির্ধারণের মাধ্যমে এই মানবসম্পদকে সংরক্ষণ করা জরুরি।