সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন দাবি হিন্দু মহাজোটের

আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে হিন্দু নির্যাতন বন্ধে জাতীয় সংসদসহ সব ক্ষেত্রে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর, লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অযুহাতে দুই জনের ওপর হামলা, রক্তাক্ত যখম, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদ এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে সংগঠনটি।

শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় বক্তারা বলেন, জাতীয় সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি না থাকায় হিন্দু সম্প্রদায় নির্যাতিত হতে হতে আজ সংকটের মুখোমুখি। আগামী নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন পুনঃপ্রবর্তনের দাবি জানাচ্ছি। যদি সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে আগামী কোনও নির্বাচনে হিন্দু সম্প্রদায় ভোট কেন্দ্রে যাবে না, ভোটে অংশগ্রহণ করবে না এবং সব ধরনের ভোট বর্জন করবে।

তারা বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, স্বৈরাচার উচ্ছেদের পর দেশে কোনও বৈষম্য থাকবে না। সব ধর্মের মানুষ সমঅধিকার ও সমমর্যাদা পাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, উপদেষ্টা পরিষদে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নাই। ১০টি সংস্কার কমিটির একটিতেও কোনও হিন্দু সদস্য নাই। বিভিন্ন সেক্টরের নিয়োগে হিন্দু সম্প্রদায় উপেক্ষিত। প্রতিদিনই দেশের কোনও না কোনও স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ভাঙচুর, জমি দখল, হত্যা, হত্যা প্রচেষ্টা, অপহরণ, নারী নির্যাতন, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার, দেশ ত্যাগে বাধ্য করার হুমকির ঘটনা ঘটে চলেছে।

বক্তারা বলেন, বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ধ্বংস, মন্দির ধ্বংস পূজার আসবাবপত্র চুরি, লালমনিরহাটে তথাকথিত ধর্ম অবমাননার অযুহাতে পরেশ চন্দ্র শীল ও বিষ্ণুপদ শীলের ওপর হামলা-জখম ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ-খুন মহামারি আকার ধারণ করেছে। স্বাধীনতার পর থেকেই হিন্দু সম্প্রদায় সব ক্ষেত্রে অবহেলার শিকার। জাতীয় সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনও প্রতিনিধি না থাকায় হিন্দুরা বছরের পর বছর নির্যাতিত হচ্ছে। কিছুদিন আগে যশোরে ১৮টি হিন্দু বাড়ি, দোকান পাঠ, মোটরসাইকেলসহ ঘরের আসবাবপত্র, খাদ্য সবকিছু ভস্মীভূত করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার পাল, সহ-সভাপতি দুলাল মন্ডল, প্রদীপ কুমার দাস, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য প্রমুখ।