রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবি আইন-সালিশ কেন্দ্রের

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আটকের নিন্দা জানিয়ে তার মুক্তি দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র। সোমবার (১৭ মে) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানায় সংগঠনটি।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামালের সাই করা বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সচিবালয়ে তথ্য সংগ্রহকালে দেশের অন্যতম স্বনামধন্য সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ রাখা হয়। পরে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। আর কোনও হয়রানি ব্যতিরেকে অনতি বিলম্বে এই সাংবাদিককে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে আসক। একইসঙ্গে আসক তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা ও তার হেনস্তার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তসাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ‘রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পেশাগত প্রয়োজনে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে এক পর্যায়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কমকর্তা-কর্মচারীরা তাকে মন্ত্রণালয়ের একটি কক্ষে আটকে রাখেন। এ সময় তাকে নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাকে এখনও শাহবাগ থানায় আটক রাখা হয়েছে।’

‘রোজিনা ইসলাম দেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একজন, যিনি প্রতিনিয়ত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করছেন। তিনি তার প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়ম তুলে এনেছেন।’

‘এছাড়া করোনাকালীন সময়ে জনগণের স্বাস্থ্য অধিকার রক্ষায় মন্ত্রণালয়ের দুর্বলতাগুলোও তার প্রতিবেদনে পরিষ্কারভাবে উঠে এসেছে। এসব প্রতিবেদন ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে এবং নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্য খাতে সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এমন একজন সাংবাদিককে পেশাগত কাজের সময় এভাবে আটক করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আসক  এ বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছে। অন্যথায় এ ঘটনা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত বাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, যা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।’