ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে সুস্পষ্ট নীতি প্রণয়ণের দাবি গণফোরামের

ড. কামাল হোসেন ও ড. রেজা কিবরিয়াকরোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের জনজীবনে দীর্ঘসময় ধরে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করেছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া। তারা বলেন, ‘এ পরিস্থিতি থেকে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া হবে দীর্ঘ এবং কষ্টসাধ্য। আসন্ন মাস ও বছরগুলোতে আমাদের জনগণের ওপর এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্ভোগের প্রভাব কমিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে সতর্ক পরিকল্পনা এবং সুস্পষ্ট নীতি-প্রণয়ন আবশ্যক।’

সোমবার (২৩ মার্চ) বিকালে গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন। এদিন বিকালে রেজা কিবরিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানান।

বিবৃতিতে জানানো হয়, রবিবার (২২ মার্চ) দেশের ৬৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। ওই চিঠিতে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্ভাব্য কর্মপরিকল্পনা সুপারিশ করেন তারা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে রেজা কিবরিয়া জানান, বিশিষ্ট নাগরিকদের খোলা চিঠির প্রতি গণফেরাম পূর্ণ সমর্থন জানায়।

বিবৃতিতে কামাল হোসেন ও রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস মহামারির প্রভাব নিয়ন্ত্রণ দলীয় রাজনীতির কোনও বিষয় নয়, এটি জাতীয় অস্তিত্বের বিষয়। মানুষের জীবন বাঁচাতে দ্রুত দৃঢ় ও সমন্বিত নীতি গ্রহণ করতে হবে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ত্যাগ স্বীকারের মধ্যে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’

বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, ‘বর্তমান সরকার বিষয়টি মোকাবিলায় অনেক মূল্যবান সময় ক্ষেপণ করে যৎসামান্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমিত বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসীদের কার্যকরভাবে আলাদা রাখতে ব্যর্থতার বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।’

গণফোরামের দুই শীর্ষনেতা বলেন, ‘ভাইরাসটির ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত ব্যবস্থার সঙ্গে চীন, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ার গৃহীত ব্যবস্থার বিস্তর ফারাক রয়েছে। কিছু কিছু দেশ জানুয়ারি মাস থেকেই করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ব্যবস্থা নিয়েছে।’

অন্যান্য দেশের উদাহরণ দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বিশ্বের বহু দেশ তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন শহর এবং কিছু দেশ সম্পূর্ণ লকডাউন বলবত করেছে। অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে যাদের কোনও সঞ্চয় নেই এবং দৈনিক/সাপ্তাহিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল, তাদের সহায়তা করতে অনেক দেশ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।’

কামাল হোসেন ও রেজা কিবরিয়া বিৃবতিতে আরও বলেন,  ‘বাংলাদেশে সহায়-সম্পদ নেই এমন কয়েক কোটি মানুষের অবস্থা আরও বেশি খারাপ। এই মানুষগুলোকে অনাহার, অপুষ্টি (বিশেষ করে শিশুদের) ও ক্ষুধা থেকে বাঁচাতে অন্তত কয়েক মাস খাওয়ানোর বন্দোবস্ত করতে হবে। এছাড়া উদ্ভূত বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা বিগত এক শতকের যেকোনও মন্দার চেয়ে ভয়াবহ ও দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে এই মন্দার পরোক্ষ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং কর্মসংস্থান উল্লেখযোগ্য হারে কমে যেতে পারে।’