‘করোনার ব্যর্থতা ঢাকতেই গ্রেফতার ও হয়রানি’

গ্রেফতারের প্রতীকী ছবিকরোনা মহামারি ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে গ্রেফতার ও হয়রানি করছে সরকার, এমন অভিযোগ করেছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। গত কয়েকদিনে মুশতাক আহমেদ, দিদারুল ভুঁইয়া ও আহমেদ কবির কিশোরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এ অভিযোগ করা হয়। বুধবার (৬ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) ও চট্টগ্রাম থেকে ‘উদ্বিগ্ন নাগরিকবৃন্দের’ ব্যানারে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়।

বুধবার বিকালে এক বিবৃতিতে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও আতঙ্কের সঙ্গে লক্ষ করছি, করোনাকালেও বাংলাদেশ রাষ্ট্র জনগণের সংকটে পাশে না দাঁড়িয়ে বরং দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা করোনা সংকটের সময়ে শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তা করার চেষ্টা করতেন, ফেসবুকে কার্টুন আঁকতেন। যে কাজগুলো সরকারের সহ্য হয়নি বলেই তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘করোনা দুর্যোগকালে নাগরিকদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা সরকারের মধ্যকার চরম অস্থিরতা, অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ। সামাজিক গণমাধ্যমে লেখা, মতামত দেওয়া বা কার্টুন আঁকার জন্য নাগরিকদের তুলে নিয়ে যাওয়া ও তাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক চরিত্রকেই তুলে ধরে। কোনও সভ্য গণতান্ত্রিক এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ সরকার দমন করে শাসন করার এরকম নীতি গ্রহণ করে তা চালিয়ে যেতে পারে না।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সংবাদপত্রে, টিভি, মিডিয়ায়, রাজপথে-যারাই যেখান থেকে প্রতিবাদ করছেন, তাদের বিরুদ্ধেই সরকার আগ্রাসী হয়ে উঠছেন। বেআইনিভাবে ক্ষমতায় আসা এই সরকার রাজনৈতিকভাবে পুরোপুরি দেউলিয়া হয়ে গেছে, এতটুকু সমালোচনা তারা সহ্য করছে না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত অর্জন ধূলিস্যাৎ হয়ে গেছে।’

এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রামের রাজনৈতিক কর্মী, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ উদ্বিগ্ন কয়েকজন নাগরিক। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন, প্রকৌশলী খোরশেদ আলম, সোমেন দাস, সাংবাদিক মোস্তাফা ইউছুফ, সুজিত চন্দ্র সাহা, অধ্যাপক আর রাজী প্রমুখ। নাগরিকেরা বলেন, ‘সরকারের সমালোচনা করার অধিকার সবার আছে। করোনা পরিস্থিতি সরকার প্রথম থেকেই সামাল দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এটা কারও কাছে অপরিষ্কার ছিল না। তাতে সরকার ও সরকারি নীতিমালার সমালোচনা করা যাবে না-এটা কোনও গণতান্ত্রিক আচরণ নয়।’

রাজনৈতিক সংগঠন ও সচেতন নাগরিকরা অবিলম্বে দিদারুল ভূঁইয়া, মুশতাক আহমেদ, আহমেদ কবীর কিশোর এবং মোমেন প্রধানের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

 

আরও পড়ুন:
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কার্টুনিস্ট কবির কিশোরসহ দু'জন গ্রেফতার

ডিজিটাল আইনের মামলায় দিদারুল ও ইমন গ্রেফতার