অসাম্প্রদায়িক দেশকে নষ্ট হতে দেবো না: মির্জা ফখরুল

সব ধর্ম-বর্ণের অধিকার রক্ষা করে অসাম্প্রদায়িক ও জনগণের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানসহ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে—আসুন, আমরা ভবিষ্যৎ ও তরুণ প্রজন্মের জন্য বাস উপযোগী বাংলাদেশ উপহার দেই। হাজার হাজার বছর ধরে এই ভূখণ্ডে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সব সম্প্রদায়ের মানুষ একই বৃন্তে নতুন ফুলের মতো প্রস্ফুটিত ও বিকশিত হয়েছি। বাস করেছি মিলে মিশে। আমরা সেই সমাজ ও দেশকে নষ্ট হতে দেবো না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন বয়স হয়ে গেছে। আমরা যাওয়ার পথে। আজকে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য তরুণ ও যুবক সমাজের দায়িত্ব অনেক বেশি। সবার অধিকারকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আপনাদের উৎসবের দিনে একাত্মতা প্রকাশ করছি। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমি আমার শৈশবে পূজামণ্ডপে নাটকও করেছি। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে নিয়ে বিজয়ার আনন্দ উপভোগ করেছি। যা আমার চেতনার সঙ্গে লালন করেছি। ঠিক একইভাবে আমার দলও একই কথা বিশ্বাস করে।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। তার লক্ষ্য ছিল যে সাম্প্রদায়িক শক্তি ও পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এবং এই রাষ্ট্রকে একটি নতুন ভূখণ্ড তৈরি করে একটি গণতান্ত্রিক ও মুক্ত সমাজ গড়ে তুলবো। যেখানে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই মিলে মিশে থাকবো। সবার অধিকার এখানে প্রতিষ্ঠিত হবে। মোটা কাপড়, মোটা ভাত খেয়ে মাথার ওপর একটা ছাদ নিয়ে সবাই মিলে আমরা একটি সুখী সমৃদ্ধির সমাজ গড়ে তুলবো।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিন্তু আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমাদের অনেকেই প্রশ্ন করেন, আমরা কি সত্যিকার অর্থেই এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম? সম্ভবত না। সত্যিকার অর্থেই আমরা অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক এবং মানবাধিকার রক্ষার বাংলাদেশ দেখতে চাই। সর্বোপরি একটি সুখী-সমৃদ্ধির বাংলাদেশ দেখতে চাই। আজকে এই উৎসবের দিনে সবাইকে  শুভেচ্ছা।’

ফখরুল বলেন, ‘দেবী দুর্গার আবির্ভাব হয়েছিল অসত্যকে পরাজিত করার জন্য। অসুন্দরের বিরুদ্ধে সুন্দরকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য। আজকে আমাদের একইভাবে অসত্য, অন্যায় ও অসুন্দরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে।’

এ সময় বিএনপি নেতা সুশীল বড়ুয়া, মিল্টন বৈদ্য, তরুণ দে, মধুসূদন মধু, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানসহ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।