সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে না বিএনপি, আলোচনায় সমাধানের আশা

আগামী ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিভাগীয় গণ সমাবেশ সরকারের প্রস্তাব অনুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে না করার ‘সিদ্ধান্ত নিয়েছে’ বিএনপি। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দুই ঘণ্টার ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য। 

স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সোমবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ না করার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। কোনও সদস্যই সরকারের এই প্রস্তাবে সম্মতি দেননি। তবে তৃতীয় কোনও ভেন্যু নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্থায়ী কমিটি সম্মতি দিয়েছে।

স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের শেষ সিদ্ধান্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা সমাবেশ করবো না। আমরা ইতোমধ্যে সরকারের কাছে তৃতীয় কোনও ভেন্যুর প্রস্তাব করেছি। তারাই এখন সেটাকে বিবেচনায় নেবে। আমাদের শেষ সিদ্ধান্ত, আমরা নয়া পল্টনেই সমাবেশ করবো।’

বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে স্থায়ী দুই সদস্য উল্লেখ করেছেন, কমিটির বৈঠকে ঢাকা জেলা, ঢাকা মহানগরের দুই কমিটিকে সর্বোচ্চ জমায়েত ও শান্তিপূর্ণভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। আসন্ন সম্মেলন ‘ঢাকা জেলা ও ঢাকা মহানগরের টেস্ট কেস’ বলেও মন্তব্য করেন একজন সদস্য।

বিএনপির অন্যতম প্রভাবশালী এক নেতা বলেন, ‘আমরা সরকারের সামনে অপশন দিয়েছি। তারা যদি বিবেচনা না করে আমরা পল্টনেই সমাবেশ করবো। সেক্ষেত্রে যদি পুলিশের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়, সেটিও সরকারের মাইনাস পয়েন্ট।’

সেক্ষেত্রে আগে থেকেই নয়া পল্টনে বিএনপির নেতাকর্মীরা অবস্থান নিতে পারে, এমন কথা শোনা গেলেও কতখানি বাস্তবসম্মত, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির সিনিয়র একজন দায়িত্বশীল বলেন, ‘দলের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বলা হয়েছে ১০ ডিসেম্বর নিয়মিত বিভাগীয় গণসমাবেশ। আগের সমাবেশগুলোয় তো কেউ সমাবেশশেষে বসে থাকেনি।’

সরেজমিনে সোমবার রাত ১১ টার দিকে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেও নেতাকর্মীদের কোনও অবস্থান দেখা যায়নি। পুরো এলাকাজুড়েই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা, টহল টিম রয়েছে। কার্যালয়ের পাশে ভিক্টোরিয়া হোটেলের নিচেও বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যদের ডিউটিরত অবস্থায় দেখা গেছে।

কার্যালয়ে দায়িত্বরত একজন জানান, ভেতরে বিএনপিনেতা রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ তার কয়েকজন অনুসারী রয়েছে। সন্ধ্যার পর কার্যালয়ে অনেক পানির বোতল নেওয়া হয়েছে। তবে কার্যালয়ের গেটে তালাবদ্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করা যায়নি।

সমাবেশ করতে না দিলে বিএনপি কী করবে, এমন প্রশ্নে স্থায়ী কমিটির এক নেতার ভাষ্য, বিএনপি সারাদেশে ৯টি সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজন করেছে।  ঢাকার সমাবেশে পুলিশ যুদ্ধাবস্থা তৈরি করেছে। তারা যদি না দেয়, সেটা সরকারের জন্য মাইনাস পয়েন্ট।’ তবে, বিকল্প কী হবে, সেটা নিয়ে স্থায়ী কমিটি পরবর্তী বৈঠকে ঠিক করবে, বলে জানান এই নেতা।

তিনি এও জানান, সমাবেশে কী ঘোষণা করা হবে, কী কর্মসূচি আসবে, তা ঠিক হবে সমাবেশের আগে আরেকটি বৈঠকে।

রাত সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বাকি সদস্যরা যোগ দেন।

বৈঠকে বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সোমবার স্থায়ী কমিটির নিয়মিত ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জেনেছি।’

আরও পড়ুন-

অনুমতি নেই এমন জায়গায় বিএনপিকর্মীদের জড়ো হতে দেবে না ডিএমপি

‘বাড়াবাড়ি করলে হেফাজতের মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে বিএনপি’

১০ তারিখের সমাবেশের দিকে দেশবাসী তাকিয়ে আছে: মির্জা ফখরুল

ঝুলে আছে ভেন্যু নির্ধারণ প্রক্রিয়া, কার্যালয়ের আশেপাশে স্থান চায় বিএনপি

সাক্ষাতে আইজিপিকে যা জানালো বিএনপি প্রতিনিধি দল

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও মানিক মিয়া এভিনিউতে আবেদনের কথা মিথ্যা: মির্জা আব্বাস

নানা ছক আঁকছে ডিএমপি, আজ থেকে মাঠে র‌্যাব

নয়া পল্টনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে দুই বার চিঠি দিয়েছে বিএনপি

দৃশ্যমান উত্তাপ থাকলেও পরিস্থিতি শান্ত রাখতে তৎপর আ.লীগ-বিএনপি

নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন মির্জা ফখরুল: ১০ ডিসেম্বর রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা জানাবে বিএনপি

নতুন বছরের শুরুতেই যুগপৎ আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপি

ডেডলাইন ১০ ডিসেম্বর: কী ঘোষণা দেবে বিএনপি?