‘বিশ-ত্রিশ লাখ লোকের সমাবেশ ভণ্ডুল করে কোনও আন্দোলন শেষ হয় না, বাংলাদেশের মানুষ চলমান আন্দোলনের মাধ্যমে তা প্রমাণ করেছে।’ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকালে রাজধানীর গুলশানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছিল বিএনপি। পরে সংঘাত-সংঘর্ষ শুরু হলে সমাবেশ বাতিল করে বিএনপি। সেই প্রসঙ্গ টেনে এমন মন্তব্য করেন আমির খসরু।
এদিন গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, এনডিএম ও গণফোরামের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির নেতৃত্ব দেন আমির খসরু। বৈঠক থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকে প্রশ্ন থাকে যে আন্দোলন আবার কবে শুরু হবে? কর্মসূচি আবার কবে হবে? একটা জিনিস পরিষ্কার করা দরকার, আন্দোলন চলমান আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি যদি মনে করেন ২০ থেকে ৩০ লাখ লোকের সমাবেশ টিয়ার গ্যাস দিয়ে, গুলি করলে আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে, আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি।’
সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘আন্দোলন চলমান আছে। দেশের মানুষ ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। এই ৯৫ শতাংশ লোক আমাদের আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। তারা বাড়িতে বসে বলেছে, তারা ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা আজ এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সুতরাং ওই মিটিং ভণ্ডুল করে, ডামি নির্বাচন করে, ক্ষমতা দখল করে কেউ যদি মনে করে আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে, তার চেয়ে বড় ভুল কিছু আর হতে পারে না।’
বৃহস্পতিবার বিকালে প্রথমে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, এরপর এনডিএম এবং সবশেষে গণফোরামের সঙ্গে বৈঠক করেন আমির খসরু। তার সঙ্গে দলের নেতা বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক প্রসঙ্গে আমির খসরু বলেন, ‘চলমান যুগপৎ আন্দোলনে আরও গতি সৃষ্টি করার জন্য আমরা আজ সহযোগী—সবাই মিলে আগামী দিনের কর্মসূচি প্রণয়ণে, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে জনগণের চাহিদা পূরণে আমরা কী করতে পারি, এই আন্দোলনের সফল সমাপ্তি কীভাবে করতে পারি, সেটাও আলোচনা করেছি। বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
বিএনপি নেতা খসরু বলেন, ‘আমাদের ঐকমত্য আগেই হয়েছে। আমাদের সবার রাস্তা একটা, আমাদের গন্তব্যস্থল একটাই, সেটা হচ্ছে—বাংলাদেশের মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি, দেশনেত্রীর মুক্তি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি আলাদা করা যাবে না। দুটো একসঙ্গে চলছে। বাংলাদেশের মানুষ এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ।’
এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের হারুন আল রশিদ খান, এনডিএম সভাপতি ববি হাজ্জাজ, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী। তারাও উল্লেখ করেন, চলমান আন্দোলন তারা সামনে এগিয়ে নেবেন।
এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলন, ভারতের সঙ্গে করা সমঝোতা স্মারক নিয়েও কথা বলেন বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতারা।
আরও পড়ুন