পাকিস্তানপন্থার রাজনীতি এখনও বহন করছে বিএনপি: ইনু

জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে খুনি মোশতাক-জিয়ার পাকিস্তানপন্থার রাজনীতি এখনও বিএনপি বহন করে চলেছে। বিএনপি জামায়াতের হাত ধরেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চিরশত্রু পাকিস্তানপন্থীরা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্বের ভিত্তিতে আঘাত করে চলেছে।

রবিবার (১৪ আগস্ট) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সেমিনার হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘হত্যা দিবস:জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় হাসানুল হক ইনু এসব কথা বলেন।

আলোচনায় ইনু উল্লেখ করেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি, বিয়োগান্তক ঘটনা।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। খুনিরা শুধু বঙ্গবন্ধুকে শারীরিকভাবেই হত্যা করেনি, খুনিরা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আত্মাকেই হত্যা করে পাকিস্তানি আত্মাকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের দেহে প্রতিস্থাপন করতে চেয়েছিল। তাই খুনিরা সংবিধান থেকে চার নীতি মুছে ফেলে। ইতিহাসের ভাগাড় থেকে কুখ্যাত দ্বি-জাতিতত্ত্ব, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা তুলে এনে রাষ্ট্র ও সমাজে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প ছড়িয়ে দিয়েছিল। খুনিরা স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের নামনিশানা মুছে দিতে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে রেখেছিল।’

‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চিরশত্রু স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানপন্থী  রাজাকার-আলবদরদের সমাজে-রাষ্ট্রে-রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানের পথে ঠেলে দেয়’ বলেন ইনু। 

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ ধরেই ২০০৯ সালে মোশতাক-জিয়ার চাপিয়ে দেওয়া পাকিস্তানপন্থা থেকে বাংলাদেশকে বাংলাদেশের পথে ফিরিয়ে আনার রাজনীতি শুরু হয়েছে। তাই পাকিস্তানপন্থার মূল ঘাঁটি বিএনপি-জামায়াত পাকিস্তানপন্থাকে রক্ষা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।’

ইনু বলেন, ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্বের ভিত্তিকে নিরাপদ রাখতে হলে পাকিস্তানপন্থার রাজনীতির ঘাঁটি ও বিষবৃক্ষ বিএনপি-জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করার পাশাপাশি জনগণের ঘরে ঘরে স্বাধীনতা ও উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেওয়ার সংগ্রাম করতে হবে। তাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকারের কোনও ভুল-ত্রুটি-সমন্বয়হীনতার সুযোগ নেই। জনগণের চাহিদা ও প্রয়োজন, কৃষি ও শিল্প উৎপাদন সচল রাখা, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সরকার-প্রশাসনে ভুল-ত্রুটি-সমন্বয়হীনতা দূর করা এবং দুর্নীতিবাজ-লুটেরাদের কঠোর হস্তে দমনের কোনওে বিকল্প নেই।’

জাসদ সভাপতি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বের প্রতিটি দেশের মতো বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতেও সাময়িক সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকট সমাধানের সুনির্দিষ্ট কোনও প্রস্তাব না দিয়ে বিএনপি-জামায়াত সংকটের ফলে জনজীবনে যে সাময়িক দুর্দশা ও কষ্ট বেড়েছে, তা নিয়ে অমানবিক রাজনীতি ও সরকার উৎখাতের জন্য মাঠ গরমের রাজনীতিতে নেমেছে।’

তিনি সংকটে অস্থিরতা ঝেরে ফেলে সংকট সমাধানে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।