বিএনপির ১০ দফা জঙ্গিবাদের পক্ষে কালো দলিল: ইনু

বিএনপির ১০ দফা সংবিধান, আইন, আদালতকে কবর দিয়ে অসাংবিধানিক, অস্বাভাবিক, জংলি সরকার আনার ষড়যন্ত্রের রাজনীতি এবং যুদ্ধাপরাধ, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পক্ষাবলম্বনের কালো দলিল বলে আখ্যা দিয়েছে ১৪-দলীয় জোটের শরিক জাসদ।

রবিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির সভাপতি সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু ও সংসদ সদস্য সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এসব প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।

জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনের সই করা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ১০ দফা দিয়ে বিএনপি আবারও প্রমাণ করলো যে তারা দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে ফেলে দিয়ে অসাংবিধানিক, অস্বাভাবিক, জংলি সরকার আনার ষড়যন্ত্রের রাজনীতির পথই আঁকড়ে ধরে আছে। তাদের আসল উদ্দেশ্য যুদ্ধাপরাধ, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিচার বন্ধ করা।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গিবাদী সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজদের মুক্ত করা। বিএনপি সংবিধান, আইন, আদালত কোনও কিছুরই তোয়াক্কা করে না।’

ইনু ও শিরীন বলেন, ‘দেশে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কোনোভাবে আলেম, ওলামা, ইসলামি চিন্তাবিদ, ইসলাম ধর্ম প্রচারক বন্দি নেই।’

জাসদের এই দুই নেতা মনে করেন, যুদ্ধাপরাধ ও জঙ্গিবাদী সন্ত্রাসের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে প্রকাশ্য আদালতে সাজাপ্রাপ্ত এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সে সাজা নিশ্চিত হয়ে যারা বন্দি আছে, তারা কেউই প্রকৃত আলেম, ওলামা, ইসালামি চিন্তাবিদ, ইসলাম ধর্ম প্রচারক নন।

জাসদের দাবি, ‘তারা ধর্মের অপব্যবহারকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। কোনও যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গিবাদী, সন্ত্রাসী, রাজনৈতিক নেতা ধর্মের মনগড়া ব্যাখ্যা বা অপব্যাখ্যা দিয়ে ওয়াজ করলেই আলেম বা নিরপাধ হয়ে যায় না। দেশের কেউই আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে না, মসজিদের ইমাম বা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল বা ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক নেতাও আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে না।’

জাসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আদালতে সুনির্দিষ্ট রায়ের পর বিচার বিভাগকে সম্পৃক্ত করে পুরাতন ধাঁচের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার কোনোই সুযোগ নাই। তারপরও পুরাতন ধাঁচের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা, আরপিও বাতিল করার দাবি তুলে বিএনপি সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে সংঘাত-সংঘর্ষের মাধ্যমে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে জল ঘোলা করার পথে যাওয়ারই ইঙ্গিত দিয়েছে।’

তারা দাবি করেন, বিএনপির ক্ষমতা পুনর্দখলের আন্দোলনের ১০ দফায় চলমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করে জাতীয় অর্থনীতি সচল রাখা, মানুষের আয় ও জীবিকা রক্ষাসহ জনজীবনে স্বস্তি বজায় রাখার কোনও প্রস্তাব নাই। বিএনপির সময় দফায় দফায় বিদ্যুৎ,  জ্বালানি, গ্যাস, পানির দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়িয়েছিল।’

হাসানুল হক ইনু ও শিরীন আখতার বলেন, ‘বিএনপি নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতেও পারেনি, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়াতে পারেনি। বিএনপির আমলেই রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক চালু এবং পরিচালক নিয়োগ শুরু হয়। দেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত বিএনপির চালু করা দুষ্টচক্রের অশুভ প্রভাব থেকে এখনও মুক্ত হতে পারছে না। বিএনপি  যতবার ক্ষমতায় ছিল, ততবারই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে ইনডেমনিটি দিয়েছে।’