গত চার আসরের চারটি শিরোপা সাকিব-মাশরাফি নিজেদের মধ্যেই ভাগ করে নিয়েছেন। চারটি শিরোপার তিনটি উঁচিয়ে ধরেছেন মাশরাফি, বাকি একটি শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছেন সাকিব আল হাসান।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে মাশরাফির অধিনায়কত্বে প্রথম দুই আসরের শিরোপা পায় ঢাকা। এরপর তৃতীয় আসরে সবাইকে অবাক করে দিয়ে সাদামাটা দল নিয়ে কুমিল্লাকে শিরোপা জেতান মাশরাফি। অধিনায়ক হিসেবে বিপিএলের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক তাই মাশরাফি। বাকি একটি শিরোপা জেতেন সাকিব আল হাসান। চতুর্থ আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়কত্ব করেন সাকিব। তার অধিনায়কত্বে গত আসরে হারানো শিরোপা পুনরুদ্ধার করে ঢাকা। গত আসরগুলোর মতো এবারও সাকিব-মাশরাফিদের মধ্যেই থাকছে শিরোপার লড়াই। এখন দেখার বিষয় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিরোপা কে উঁচিয়ে ধরতে পারে। এর উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত।
ঢাকা খুব সহজে লিগ পর্ব পেরিয়ে ফাইনালে উঠে গেলেও রংপুরের জন্য কাজটা মোটেও সহজ ছিল না। যদিও ভাগ্য সব সময় সাহসীদের পক্ষেই কথা বলে। মাশরাফির ক্ষেত্রে কথাটা শতভাগ সত্য। শেষ পর্যন্ত নাটকীয় এক ম্যাচে কুমিল্লাকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে রংপুর। এবার নিয়ে চার-চারবার ফাইনালে উঠল মাশরাফির নেতৃত্বাধীন দল। প্রথম দুবার ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স-দুবারই শিরোপা জেতে ম্যাশের দল। তৃতীয় আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকেও শিরোপা জেতান মাশরাফি। চতুর্থ আসরে অবশ্য হতাশ হতে হয় মাশরাফিকে। তবে আসরের পঞ্চম পর্বে আবারও স্বরূপে উদ্ভাসিত এই অধিনায়ক।
ঢাকা ডায়নামাইটস শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের জন্য অন্তত প্রস্তুতি নিতে পেরেছে। কিন্তু রংপুর রাইডার্স তাও পারেনি। সোমবার ফাইনাল নিশ্চিত করার পরের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদের ২২ গজে শিরোপার লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে। স্বল্প এই সময়ে নেটে ব্যাটে-বলের প্রস্তুতি তো দূরে থাক, ঠিকমতো বিশ্রামের সুযোগও হয়নি। মাশরাফিরা অবশ্য এত চাপ নিতে চাইছেন না। উপভোগের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েই সতীর্থদের খেলার আমন্ত্রণ জানালেন, ‘আমরা চাপ নিতে চাই না। আমাদের মধ্যে চাপ নেইও। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে কেউই ভাবেনি আমরা ফাইনাল খেলতে পারবো। শেষ পর্যন্ত ফাইনালে উঠেছি। ম্যাচটি শুধুমাত্র উপভোগ করতে চাই। মাঠে ভালো খেললে ফল আমাদের পক্ষেই আসবে।’
এদিকে ঢাকার বোলাররা টুর্নামেন্টে দারুণ ধারাবাহিক ছিলেন। সেটার প্রমাণ আছে পরিসংখ্যানেও। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সেরা পাঁচ উইকেটশিকারির তিনজনই ঢাকা ডায়নামাইটসের। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ফাইনালেও ব্যবধান গড়ে দেওয়ার দায়িত্ব থাকবে এই বোলারদের ওপরই। সাকিবও মনে করছেন তাই, ‘আমাদের বোলিং আক্রমণ ভালো। তিন মূল স্পিনারের পাশাপাশি রনিও পুরো মৌসুমে ভালো বোলিং করেছে। মোসাদ্দেকও খুব ভালো করছে। সব মিলিয়ে বোলিং আক্রমণ ভালো করছে।’
সাকিবের মতো এই চাওয়া বিপিএলের দর্শকদেরও। নাটক, বিতর্ক বা নেতিবাচক ব্যাপারগুলোকে পাশে সরিয়ে রেখে উপভোগ্য একটা ফাইনাল উপহার দিতে চান সাকিব, ‘যেহেতু একটি দলের হয়ে খেলছি, অবশ্যই চেষ্টা থাকবে দল যেন চ্যাম্পিয়ন হয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো, ওই দিনটিতে কে ভালো খেলে। টি-টোয়েন্টিতে একজন-দুজনও খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ভালো একটা ম্যাচ হোক। খেলাটা সবাই উপভোগ করুক।’