সৌম্য-তাসকিন-সাব্বিরদের পাশে মাশরাফি

 

সৌম্য, তাসকিন ও সাব্বির২০১৭ সালে সৌম্য, তাসকিনদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট ছিল না বিসিবি। তাই ২০১৮ সালের কেন্দ্রীয় চুক্তির পরিধি এবার হয়ে গেছে আরও ছোট। ১০ জনের প্রাপ্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদ, মোসাদ্দেক হোসেন ও সাব্বির রহমান! ছেঁটে ফেলা এই তরুণদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

বৃহস্পতিবার নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আইপিডিসির চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সতীর্থদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন মাশরাফি। এমনিতে ছোটদের অভিভাবক মাশরাফি বিশ্বাস করেন বাদ পড়া ক্রিকেটাররা পারফরম্যান্স দিয়েই জায়গা পাবে কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকায়, ‘তারা বাংলাদেশের সত্যিকারের ভবিষ্যৎ, তাদের সমর্থন করা এখন আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। আমার জায়গা থেকে আমি পিছ পা হব না। যতভাবে সমর্থন দেওয়ার যায়, আমি দিয়ে যাবো।’

তাসকিনদের মতো বাদ পড়েছেন জাতীয় দলে নিয়মিত ইমরুল কায়েস ও কামরুল ইসলাম।  তবে মোসাদ্দেক, সাব্বির, তাসকিন ও সৌম্যকে নিয়ে অনেক আশাবাদী মাশরাফি। তাদেরকে সত্যিকার ভবিষ্যৎ তারকাই মনে করেন। একই সঙ্গে এও মনে করেন তরুণদের জন্য এই মুহূর্তে ক্রিকেট খেলাটা অনেক বেশি চাপের হয়ে গেছে, ‘বাংলাদেশের খুব বেশি বিকল্প খেলোয়াড় নেই। যে চারজনের নাম বলছেন, এরাই বাংলাদেশের সত্যিকারের ভবিষ্যৎ। তারা নিজেদের ছোট ক্যারিয়ারে সেটি প্রমাণ করেছে। আমার বিশ্বাস ধারাবাহিকতা বাড়িয়ে ফর্মে ফিরে আসতে পারলে, বাংলাদেশকে অনেকদিন সেবা দিতে পারবে ওরা। এক সময় সাকিব, তামিম, আমরা এমনই ছিলাম। বলতে পারেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা এই মাত্রায় না থাকায় আমরা টিকে গেছি।’

তরুণদের কাছে প্রত্যাশার চাপটা অনেক বেশি। একই সঙ্গে এই বয়সে অনেক বাড়তি চাপ নিতে গিয়ে তারা হিমশিম খাচ্ছে বলেই মনে করেন মাশরাফি, ‘তাদের কাছে প্রত্যাশাটা অনেক। সে জায়গা থেকে ওরা খারাপ করলে সোশ্যাল মিডিয়াও এত সোচ্চার হয়ে পড়ে যে একটা প্রভাব চলে আসে। ক্রিকেট খেলাটা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। ২২-২৩ বছর বয়সে এত সমালোচনা নিয়ে মাঠে গিয়ে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলাটা কঠিন হয়ে পড়ে। আমাদের সিনিয়রদের তরফ থেকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। এখন ফর্মে ফিরে আসতে তাদেরও চেষ্টা করতে হবে।’

পৃথিবীর সব দেশেই কেন্দ্রীয় চুক্তিতে বেশি বেশি ক্রিকেটারদের রাখা হয়। সেখানে উল্টো বাংলাদেশেই। সংখ্যাটা ১৬ ক্রিকেটার থেকে কমিয়ে ১০ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মাশরাফির মন্তব্য, ‘বেতনটা একটা খেলোয়াড়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, একই সময়ে একজন খেলোয়াড়কেও ততটুকু প্যাশনেট হয়ে খেলতে হবে। আমার বিশ্বাস সবাই সেভাবে খেলছে। এখন পারফরম্যান্স সব সময়ই একই গ্রাফে চলে না। কারো কখনো ভালো যায়, কারও খারাপ। বেতনের বিষয়টা নির্ভর করে পারফরম্যান্সের ওপর। এখন বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত।’

নিজের উদহারণ টেনে মাশরাফি বলেছেন, ‘প্রথমত আমি যতদিন ধরে খেলছি, বেতনের ভেতর ছিলাম কি ছিলাম না ‍-এসব নিয়ে ভাবিনি। আমার সব সময়ই প্যাশন ছিল ক্রিকেট খেলা। ওই প্যাশন নিয়ে ক্রিকেট খেলছি। আর বেতন একজন খেলোয়াড়ের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বেশির ভাগ খেলোয়াড় এসেছে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। বেতনের বড় প্রভাব থাকে এই পরিবারের ওপর। এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।’