ফ্লোরিডায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা-এই ব্যাপারে অনেকেরই সংশয় ছিল। তার অন্যতম দুটি কারণ ছিল প্রতিপক্ষ দল এই ফরম্যাটে যথেষ্ট পারদর্শী এবং দ্বিতীয়ত কিছু বিচ্ছিন্ন পারফরম্যান্স ছাড়া দল হিসেবে বারবারই এই ফরম্যাটে আমাদের খেলোয়াড়দের সামর্থ্যের সেরাটা দিয়ে জ্বলে উঠতে পারে না।
কাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েট টস জিতে আমাদের ব্যাট করতে পাঠিয়ে দুটো উপকার করেছেন। প্রথমত রান তাড়া করার কোন চাপ মাথায় না নিয়ে ব্যাটসম্যানরা ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছে এবং আনুপাতিক হারে প্রথমার্ধের পিচে বল দ্বিতীয়ার্ধের চেয়ে আনুপাতিক হারে ভালো গতিতে ব্যাটে এসেছে। যার ফলে চমৎকার টাইমিংয়ের সঙ্গে দুর্দান্ত স্ট্রোকস তামিম ও সাকিবরা খেলতে পেরেছে। বাংলাদেশ দলের পরম সৌভাগ্য ছিল দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও ইনফর্ম দুজন ব্যাটসম্যান তামিম ও সাকিব ১২০ বলের মধ্যে ৮২টি বল ভাগাভাগি করে খেলেছেন এবং সেই কারণে ৬ নম্বরে নামা রিয়াদের ভাগ্যে ১০টির বেশি বল জোটেনি।
সাকিব-তামিমের ৯০ রানের জুটির ওপর ভর করে বাংলাদেশের ইনিংস গতি পেয়েছে তবে তামিমের ইনিংসের শুরুর দিকে তার অতি সহজ ক্যাচটি ফেলে না দিলে ১৭১ রানে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যেতে পারতো। সৌম্য অতি ভাগ্যবান যে আজও কাপ্টেন তাকে দলে রেখেছেন এবং ৪ নম্বরে খেলিয়ে ফর্মে ফেরত আনার চেষ্টা করেছেন। ১৮টি বলের শেয়ার ইনফর্ম ব্যাটসম্যানরা বা রিয়াদ পেলে তার থেকে অনেক বেশি ফায়দা তুলতে পারতেন। স্বল্প দৈর্ঘ্যের খেলায় আউট অফ ফর্মের ব্যাটসম্যানকে নিয়ে আর কোনও বাজি ক্যাপ্টেন ধরবেন না বলে বিশ্বাস করি। দলের বিকল্প খেলোয়াড়দের প্রতিও আস্থা রাখা উচিত।
১৭১ রানকে ডিফেন্ড করাটা অনেক কঠিন কাজ ছিল বোলারদের জন্য। একজন স্পিনারের জায়গায় আবু হায়দার রনিকে এনে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। উঠতি এই বোলার প্রাপ্ত সুযোগের যোগ্য প্রতিদান দিয়েছেন দলকে। মুস্তাফিজ মিতব্যয়ী না হলেও প্রয়োজনে প্রতিপক্ষের ভয়ংকর ব্যাটসম্যানদের সাজঘরে ফিরিয়ে দিয়ে সবচেয়ে সফল স্ট্রাইক বোলার ছিলেন আজ। মারলন স্যামুয়েলস হতে পারতেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে এককভাবে জিতিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো ক্ষমতাধর একজন ব্যাটসম্যান। তার আউটটি আমার কাছে এই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট মনে হয়েছে। রুবেলের পাশাপাশি নাজমুল অপু দারুণ বল করেছেন এবং ম্যাচের শেষ ওভারটি করার জন্য যখন দলনায়ক তার ওপর আস্থা রাখলেন সেটা বোলার হিসেবে তার এক বিরাট প্রাপ্তি বলে আমি মনে করি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল রান তাড়া করতে গিয়ে অস্থিরতায় ভুগেছে। আন্দ্রে রাসেলকে তিন নম্বরে ব্যাট করানোর কোনও যৌক্তিক কারণ আমি খুঁজে পাইনা। রোভম্যান পাওয়েলের আগে দিনেশ রামদিনকে ব্যাট করতে পাঠানো ব্র্যাথওয়েটের একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। খুব অল্প সময়ের বিরতিতে আগামীকাল দু’দলই তাদের ভুল ত্রুটি সংশোধন করে সিরিজ জেতার জন্য মাঠে নামবে। নিজেদের আস্থায় চিড় ধরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে ঘায়েল করার এটাই উপযুক্ত সময়।