বিপিএল খেলে যাওয়ার সুবিধা নিতে পারেনি

গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।বাংলাদেশের ব্যাটিং- বোলিং দেখে মনে হয়নি যে তারা নিয়মিতভাবে একমাসের ওপর উপর্যুপরি ভাবে বিপিএলে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলে গেছেন। উদ্বোধনী একটা জুটি হয়েছে ৭১ রানের, সেটাই ছিল উজ্জ্বলতার দিক। সেখান থেকে ১৬৫-১৭০ রানের কোঠায় না পৌঁছাতে পারাটা মোটেই আকাঙ্ক্ষিত ছিল না। আমার চোখে যে বড় পার্থক্যটা ধরা পড়েছে বিপিএলে অনেক প্রাণবন্ত ও বাউন্সি পিচে আমাদের ব্যাটসম্যানরা ব্যাটিং করেছে। পক্ষান্তরে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের পিচটি স্লো ও বলের বাউন্স ছিল কম। অন দ্য রাইজ শট খেলা যায়নি, উভয় অর্ধেই বড় শট খেলার ব্যাপারে দুই দলের ব্যাটসম্যানদের বেশ বেগ পেতে হয়। তাছাড়া গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের আউট ফিল্ডে ঘাস ছোট থাকার কারণে দুই রানের সংখ্যা অনেক কম হয়েছে।

এই ধরনের পিচে আমাদের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের একজন শেষ অবধি খেলতে পারলে আরও ২০-২৫টি রান যোগ করা যেত। এমন পিচে নতুন ব্যাটসম্যানদের এসেই বড় শট খেলা মুশকিল। তবে আজ পাকিস্তানের বোলিং লাইন আপ ছিল অনেক গোছানো ও গতিময়। ৩জন পেসারই বল করেছেন ১৪৫ কি.মি এর আশে পাশে, লাইন ছিল চমৎকার। ১৯ বছরের মোহাম্মদ হাসনাইন একটু খরুচে হলেও তিনি আমাকে মুগ্ধ করেছেন। নতুন বলে স্পিনে ইমাদ ওয়াসিম ছিল যথেষ্ট টাইট ও পরবর্তীতে শাদাব খান তার ভেরাইটি নিয়ে ছিল যথেষ্ট উজ্জ্বল।

বাংলাদেশ কোনও বোলারকেই পেটানোর জন্য আলাদা করে বেছে নিতে পারেনি। আফিফ, সৌম্য, মিঠুনকে নিয়ে মিডল অর্ডার আজ বারবার সাকিব ও মুশফিকের কথা মনিয়ে করিয়ে দিয়েছে। তাদের অভাব ঢেকে দেওয়ার মতো ব্যাটিং আফিফদের কাছ থেকে আসতে হবে, নইলে মিডল অর্ডারে অনেক বাড়তি চাপ রিয়াদের কাঁধে পড়বে।

১৪১ রানকে পুঁজি করে পাকিস্তানকে তার মাটিতে আটকানো কঠিন। যদিও ওরাও ওদের দলকে নতুন করে সাজিয়েছে। ব্যাটিং-বোলিংয়ে অনেক তরুণ উঠতি খেলোয়াড়দের সংযোজন হয়েছে। ১৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে তাদের কখনোই তেমন বেগ পেতে হয়নি। ৩জন পেস বোলার ক্রমাগত উইকেট নিয়ে বা মিতব্যয়ী বোলিং করে কোনও চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি। আফিফ ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বোলিংয়ে তেমন কোন ধারই পরিলক্ষিত হয়নি। ১৪২ রানের সহজ টার্গেট থাকার কারণে কোন ঝুঁকিপূর্ণ শটই তাদের খেলতে হয়নি। এক রানের ওপর ভর করে তারা অনায়াসেই জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। মূলত ব্যাটিংয়ে দুর্বল স্ট্রাইক রেটের কারণেই প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে হারতে হলো। ফিল্ডিংয়ে ক্যাচিং দুর্বলতা, রান আউটের সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে না পারাটা আরেকটি দুশ্চিন্তার কারণ।

২৪ ঘণ্টার মধ্যেই একই ভেন্যুতে তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে হবে। পুষিয়ে নেওয়ার জন্য সময়টা যথেষ্ট নয়। মাঝে একটা অনুশীলন সেশন পেলে ভালো হতো। পাকিস্তানের দর্শকরা নিজের দেশের মাঠে বসে ক্রিকেট উপভোগ করছেন, দৃশ্যগুলি বেশ দৃষ্টিনন্দন ছিল।