সুমনাকে দলে ফেরাতে চায় বিসিবি

জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনাদুই বছর আগের কথা। ১৮ বছর বয়সী জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পচেফস্ট্রুমে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সঙ্গী হয়েছিলেন। স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে তিনটি ম্যাচ খেলার সুযোগ হলেও বল হাতে পাননি একটি ম্যাচেও! দক্ষিণ আফ্রিকায় অনেকেই তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেলেছিলেন, অথচ সেই সুমনাই দাপিয়ে খেলছেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে। মার্চে শেষ হওয়া মৌসুমে ব্যাট ও বলে সিডনি ক্রিকেট ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন করতে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পরিণতেএই সুমনাকে দ্রুতই জাতীয় দলে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মহিলা বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।

বুধবার বাংলা ট্রিবিউনে সুমনাকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতেই শফিউল আলমের কাছে কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল সুমনার ভবিষ্যৎ নিয়ে। শফিউল সুমনাকে দ্রুতই বাংলাদেশ দলে ফিরিয়ে আনতে চান , ‘অস্ট্রেলিয়ায় ওর সঙ্গে কথা হয়েছিল। ওখানে ও (সুমনা) খুব ভালো আছে। ভালো খেলছে। ও আমাদের ভাবনার বাইরে নেই। আমি নিজেও ওকে দেখে এসেছি। সে ভালো অবস্থানে আছে, ভালো খেলছে, শিখছে অনেক কিছু। সে  আমাদের ভবিষ্যৎ তারকা। আমি মনে করি যে অভিজ্ঞতা তার ওখানে হচ্ছে, সেটা আমাদের ক্রিকেটে কাজে লাগাতে পারবে। আমরা অবশ্যই অল্প সময়ের মধ্যে তাকে দলে ফিরিয়ে আনবো।’

এই অল্প সময়টা ঠিক কত দিনের সেটাও স্পষ্ট করেছেন শফিউল, ‘এ মুহুর্তেই যে নেবো, তেমন নয়। আবারো বলছি সুমনার ব্যাপারে আমাদের সবার মধ্যেই ইতিবাচক ধারণা আছে। সে যেভাবে নিজেকে মেলে ধরেছে, আমাদের মেয়েদের জন্য কিন্তু এটা স্বপ্নের মতো। আমি মনে করি আরও কিছুদিন যদি ওখানে থেকে নিজেকে আরও পরিণত করতে পারে, তাহলে ওর পাশাপাশি আমাদের দলের জন্যও ভালো হবে। সে অবশ্যই জাতীয় দলে খেলার যোগ্যতা রাখে এবং নিজের পজিশনেই।’

বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলে স্পিনারের ছড়াছড়ি। ২০১৮ সালে পচেফস্ট্রুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সুমনার অভিষেক ম্যাচে দলে ছিলেন আরও চার স্পিনার। স্পিনারের আধিক্য থাকায় বিশেষজ্ঞ অফ স্পিনার হয়েও তিন ম্যাচের একটিতেও বল হাতে পাননি সুমনা। তথ্যটি জেনে শফিউল রীতিমতো বিস্মিত, ‘কী বলেন, বিশেষজ্ঞ স্পিনার হয়েও বোলিং করার সুযোগ হয়নি! হয়তো টিম ওয়ার্কের কোনও অংশ ছিলো! আমি পরিষ্কার জানি না। তবে বিশ্বকাপ ব্যর্থতার ব্যাপারে আমি পুরোপুরি অবগত।’

খানিকটা থেমে গত টি-২০ বিশ্বকাপ নিয়েই শফিউল বলে যান, ‘বিশ্বকাপে ব্যর্থতার কারণ কী, সেটা আপনারা কমবেশি জানেন। গত দুই বছর ধরে আমাদের যে পারফরম্যান্স ছিল, সেটা কিন্তু বিশ্বকাপে ছিল না। দলের মধ্যে থাকা নানারকম সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হতো। দল বিশ্বকাপ থেকে ফেরার পরই করোনার কারণে সব বন্ধ হয়ে গেলো। বিশ্বকাপে কেন ব্যর্থ হলাম, ব্যর্থতার কারণগুলো আমরা বের করতে পারিনি। অবশ্যই এগুলো আমরা অনুসন্ধান করবো যাতে ভবিষ্যতে এমন সমস্যা না হয়। আর যাতে নতুন ক্রিকেটাররা ঠিকমতো সুযোগ পায়, সেটি  দেখা হবে। সবার সঙ্গে কথা বলেই আসলে সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে।’

শফিউল কোচিং স্টাফে পরিবর্তন আনার কথাও বলেছেন, ‘বিশ্বকাপে আমাদের ব্যর্থতা খুবই দূ:খজনক ও বিব্রতকর। গত দুই বছর আমরা যা যা প্রয়োজন সব সাপোর্ট দেওয়ার পরও এমন ফল হতাশাজনক। আপনারা জানেন আমরা ইতিমধ্যে প্রধান কোচকে (অঞ্জু জৈনকে) অব্যহতি দিয়েছি। আমরা কোচিং স্টাফে পরিবর্তন আনবো। কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। আমাদের স্থানীয় কোচরা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’ প্রসঙ্গত, ভারতের বরোদা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অতুল বেদাদেকে বরখাস্ত করে তাদের নারী দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে অঞ্জু জৈনকে। 

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ দলে উপেক্ষিত সুমনা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট