পাকিস্তান বধ দিয়ে ইডেন অভিষেক স্মরণীয় করতে চায় টাইগাররা

বাছাই পর্বে গ্রুপের শীর্ষে থেকেই গত রবিবার সুপার টেন নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। আজ বুধবার সুপার টেনের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। আজকের ম্যাচটি হবে ইডেন গার্ডেনে। ওয়ান ডে ও টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর এই প্রথমবার বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ইডেন গার্ডেনে ম্যাচ খেলবে। তাই সবকিছু ছাপিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে চলছে বাড়তি উন্মাদনা।

ইডেনে টাইগারদের প্রস্তুতি

মেলবোর্ন, লর্ডসে খেলা হলেও এখন পর্যন্ত ইডেনে খেলার সুযোগ হয়নি বাংলাদেশের। অবশ্য এই তথ্যের সঙ্গে একটা ফুটনোট আছে। খেলা যে একেবারেই হয়নি তা নয়, হয়েছিল একবার ২৫ বছর আগে। তবে ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের যে দলটি এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই মাঠে খেলেছিল তাদের ছিল না ওয়ান ডে কিংবা টেস্ট স্ট্যাটাস। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের হাঁটি হাঁটি পা পা যুগের ওই ম্যাচে ৭৩ রানে হেরেছিলো বাংলাদেশ। এরপর বাংলাদেশের ক্রিকেটে নানা রঙ লাগলেও এই মাঠটি এখনও অচেনা বাংলাদেশ দলের কাছে।

বর্তমানে জাতীয় দলে থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে কেবল সাকিবই এই মাঠে অনেকবার খেলেছেন। তাও আইপিএলের সুবাদে। তার দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের এটি হোমগ্রাউন্ড। দলের বাকিদের কাছে এই মাঠ চেনানোর বাতিঘর আজ তিনি। টানা ১৫ বছরের ক্যারিয়ার হওয়ার পরেও আজই এই মাঠে খেলার সুযোগ হচ্ছে টাইগার অধিনায়ক মাশরাফিরও। স্বাভাবিকভাবেই এই ম্যাচকে ঘিরে তিনিও রোমাঞ্চিত।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ইডেনের অভিষেক ম্যাচটাকে স্মরণীয় করে রাখতে চান তিনি।

ধর্মশালায় সব প্রতিবন্ধকতাকে ছাপিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইডেনে খেলার স্বপ্নটা সত্যি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এটাই এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বড় অর্জন। এই অর্জনকে আরও বেশি রাঙিয়ে তুলতে পারে বাংলাদেশ। এ ম্যাচ জয় দিয়েই শুরু করতে চান মাশরাফি। মূল পর্বে দলগুলোর বিপক্ষে খেলা কঠিন হলেও ভালো খেলার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী মাশরাফি।

সুপার টেনে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের লড়াইয়ে পরিসংখ্যানের পাতা ওল্টালে পাকিস্তানকে এগিয়ে রাখতে হবে। কেননা দুই দল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে মুখোমুখি হয়েছে ৯ বার। যার সাতটিতেই জিতেছে পাকিস্তান। শেষ দুটি ম্যাচে বাংলাদেশই জয় পেয়েছে।

তবে অতীতের ইতিহাস দিয়ে এখনকার টিম বাংলাদেশকে মেপে কোনও লাভ নেই। পাকিস্তানে বদল হয়েছে। এখন দেখার বিষয় এই বদলে যাওয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে টাইগাররা কেমন খেলে।

দুই দলের লড়াইয়ে সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান। ৮ ম্যাচে তার সংগ্রহ ২৪২ রান। অন্যদিকে, বোলিংয়ে আছেন শহীদ আফ্রিদি। তিনি ৯ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ৮টি উইকেট।

ইডেন গার্ডেনে প্রথম ম্যাচ খেলেই টাইগাররা চলে যাবে বেঙ্গালুরুতে। সেখানে ২২ মার্চ তাদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। গত নভেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলতে দেশে আসার কথা ছিলো তাদের। কিন্তু নিরাপত্তার অজুহাতে দলটি আসেনি। এই দলের বিপক্ষে সাকিব-তামিমরা মাত্র তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। যার সবগুলোই হেরেছে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ১১০ রান নিয়ে সর্বোচ্চ সংগ্রাহক। অন্যদিকে ডার্ক ন্যানেস এক ম্যাচে চার উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক।

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচ শেষ করেই বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ভারতে। এই দুটি দল সর্বশেষ এশিয়া কাপে ফাইনাল খেলেছে। বৃষ্টিবিঘ্নিত এই ম্যাচে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে হেরেছিল। বিশ্বকাপের সুপার টেনে গ্রুপ-২ এ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ২৫ মার্চ বেঙ্গালুরুতে।

পরিসংখ্যান ঘেঁটে জানা গেছে, বাংলাদেশ চারবার মুখোমুখি হয়েছে ভারতের বিপক্ষে। যার সবগুলো ম্যাচই জিতেছে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচগুলোতে রোহিত শর্মা ১৭৬ রান করে সবার ওপরে অবস্থান করছেন। সুপার টেনের শেষ ম্যাচ বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইডেন গার্ডেনে। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ মার্চ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। দুই দলের লড়াইয়ে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয়েছে তিনবার। এর মধ্যে একটি ম্যাচও জেতেনি বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের নাসির হোসেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (৭৮) সংগ্রাহক।  অন্যদিকে টিম সাউদি ৩ ম্যাচে ৬টি উইকেট নিয়ে সবার ওপরে আছেন।

/এসটি/টিএন/