সাকিবের ব্যাটিং নিয়ে হতাশ সামারাবিরা

সাকিবের ব্যাটিং নিয়ে হতাশ সামারাবিরাসাকিবকে নিয়ে সামারাবিরার আক্ষেপ ভিন্ন জায়গায়। সাকিব অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। সেই হিসেবে দলের বিপর্যয়ে সামনে থেকে গুরু দায়িত্ব পালন করা উচিত। কিন্তু সেটা না করে, অযথাই বাজে শট খেলে আউট হচ্ছেন সাকিব।

সাকিবের ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন করতেই হতাশায় ভরে উঠলো বাংলাদেশের ব্যাটিং পরামর্শক থিলান সামারাবিরার কণ্ঠ! হতাশ হবেন নাইবা কেন? সেই ওয়েলিংটন টেস্ট থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত জেদ ধরে আছেন তিনি। নিজের স্বাভাবিক খেলার নাম করে যাচ্ছে-তাই ভাবে আউট হচ্ছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। ওয়েলিংটন টেস্টের ২১৭ রানের ইনিংস খেলেও সমালোচিত হতে হয়েছিল এই সাকিবকে। এই ধারাটা অব্যাহত রেখেছেন কলম্বো টেস্টেও।

বৃহস্পতিবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করে বার বার আউট হওয়ার চেষ্টা করেছেন সাকিব। দুর্ভাগ্য বলতেই হবে লঙ্কানদের। একটি ফুল চান্স দিয়ে বেঁচে যাওয়া সাকিব শেষ ওভারে উঠিয়ে মেরেছিলেন। অদ্ভুত হলেও সত্য এমন একটি মাইলফলকের ম্যাচে সাকিব টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেললেন! দিনশেষে ২২৫ স্ট্রাইক রেটে ৮ বলে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

সাকিবের এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিং সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন বাংলাদেশের এই ব্যাটিং পরামর্শক। তবে কি সাকিব লঙ্কান এই ব্যাটিং কোচের কোনও কথাই শোনেন না! এমন কিছু অবশ্য বলেননি সামারাবিরা। তবে যা বলেছেন সেটাই চমকে উঠার মতো, ‘সত্যিই আমি জানি না, কেন সাকিব এমন শট খেলছে। কেনই বা তাড়াহুড়ো করছে। সে প্রত্যেকবারই এভাবে আউট হচ্ছে।’

সাকিবকে নিয়ে সামারাবিরার আক্ষেপ ভিন্ন জায়গায়। সাকিব অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। সেই হিসেবে দলের বিপর্যয়ে সামনে থেকে গুরু দায়িত্ব পালন করা উচিত। কিন্তু সেটা না করে, অযথাই বাজে শট খেলে আউট হচ্ছেন সাকিব। এই পরিস্থিতিকে সামারাবিরা দেখছেন এভাবে, ‘যখন আমাদের উইকেট পড়ে যাচ্ছে, সাকিব কখনোই শটস খেলা বন্ধ করতে পারছে না। আমি জানি না কোথায় তার সমস্যা। আগামীকাল আমাদের নতুন দিন। আশা করি আমরা লক্ষ্যের কাছাকাছি যেতে পারব।’

দিনশেষে সাকিব যেভাবে তাড়াহুড়ো করেছেন তাতে করে স্কোরবোর্ডে আরও একটি উইকেট গেলে হতাশ হওয়ার কিছু ছিল না! ঠিক এমনটাই মনে করেছেন বাংলাদেশের এই ব্যাটিং পরামর্শক। তার মতে, ‘শট নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানদের অনেক সচেতন হতে হবে। প্রতিপক্ষ সবসময় ব্যাটসম্যানের দুর্বলতা নিয়ে কাজ করে আক্রমণ করে। ব্যাটসম্যানদের অবশ্যই এই জায়গাতে সচেতন থাকা উচিত। আমরা ভাগ্যবান আমাদের ৬টি উইকেট যায়নি। দিনশেষে আমরা পাঁচ উইকেট নিয়ে শেষ করতে পেরেছি!’

গল টেস্টে শূন্য রানে জীবন পেয়ে সেটাকে কাজে লাগিয়েছিলেন কুশল মেন্ডিস। সামারাবিরার আক্ষেপ অবশ্য এই জায়গায়- বাংলাদেশের কোনও ব্যাটসম্যান জীবন পেলে সেটা কাজে লাগাতে পারেন না, ‘কেউ যদি পঞ্চাশ রান করেই ভাবে- এটাই যথেষ্ট। এমনটা মেনে নেওয়া যায় না। ব্যাটসম্যানদের রানের ক্ষুধা থাকা লাগবে। গলে কুশল নো বলে বেঁচে গিয়ে ১৯০ রানের ইনিংস খেলেছিল। কিন্তু আমাদের ব্যাটসম্যানরা জীবন পেয়ে সেটা কাজে লাগাতে পারছে না। ব্যাটিং উইকেটে এই কাজটা করা আরও গুরুত্বপূর্ণ।’

ম্যাচের আগে ছেলেদের পরামর্শ দেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, ‘না। সবাই অনেক দিন ধরে ক্রিকেট খেলেছে। সবাই জানে কোন পরিস্থিতি কীভাবে খেলতে হয়!’

সাকিব প্রায়ই বলেন, নিজের মতো করেই সবার খেলা উচিত। সামারাবিরাও এর সঙ্গে একমত। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে খেলার ওপর জোর দেন তিনি, ‘অবশ্যই নিজের সহজাত খেলাটাই খেলা উচিত। কিন্তু প্রতিপক্ষের গেম প্ল্যানের ওপরও নজর রাখতে হবে। সব সময়ই পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে ব্যাটসম্যানদের আক্রমণ করতে হয়। এটা ওয়ানডে ক্রিকেট নয়, পাচঁদিনের ক্রিকেট।’

/আরআই/এফআইআর/