টি-টোয়েন্টিতেও সেই বিবর্ণ বাংলাদেশ

বিশাল সংগ্রহ গড়েও অসহায় আত্মসমর্পণ করে হতাশ বাংলাদেশ। ছবি-বিসিবিটি-টোয়েন্টি ইতিহাসে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস গড়লো বাংলাদেশ। জাতীয় দলে ফিরে সৌম্য সরকার নিজেকে প্রমাণ করলেন ঝড়ো হাফসেঞ্চুরিতে। মুশফিকুর রহিম তো ছাড়িয়ে গেলেন আগের সবকিছুকে। এতো প্রাপ্তির পরও মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে হলো বাংলাদেশকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯৩ রানের ইনিংস দাঁড় করিয়েও যে হারতে হয়েছে ৬ উইকেটে।

লঙ্কানদের ব্যাটিং তাণ্ডবে আসলে বোলিং ইনিংসে একবারও জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়নি স্বাগতিকদের। কুশল মেন্ডিস ও দানুশকা গুনাথিলাকা ওপেনিংয়ে যে ভিত গড়ে দিয়ে গেলেন, তার ওপর দাঁড়িয়ে দাসুন শানাকা ও থিসারা পেরেরা লঙ্কানদের নিয়ে গেলেন জয়ের বন্দরে। ১৬.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে পাওয়া জয়ে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দল।

ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে ফর্মের তুঙ্গে থাকা পেরেরা জ্বলে উঠলেন আরেকবার। বাংলাদেশি বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন এই অলরাউন্ডার। মাত্র ১৮ বলে খেলেছেন হার না মানা ৩৯ রানের টর্নেডো ইনিংস, যাতে ৪ বাউন্ডারির সঙ্গে হাঁকিয়েছেন ৩ ছক্কা।

শুধু পেরেরা কৃতিত্ব পাবেন না, এই জয়ে সমান অবদান রেখেছেন শানাকাও। এই ব্যাটসম্যানও ছিলেন বিধ্বংসী। ২৪ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় হার না মানা ৪২ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন শানাকা। যাতে ত্রিদেশীয় ও টেস্ট সিরিজ হারের পর আরেকটি ধাক্কা বাংলাদেশের ক্রিকেটের গায়ে। বিশেষ করে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে এত বড় স্কোর গড়েও এমন অসহায় আত্মসমর্পণের ছবিতে বিবর্ণ বাংলাদেশকে দেখা গেল আরেকবার।

কঠিন লক্ষ্যে খেলতে নেমে মিরপুরে ঝড় তুলেছিলেন কুশল মেন্ডিস। ওপেনিংয়ে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের রীতিমত শাসন করা এই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়েছেন আফিফ হোসেন। শুরুটা করেছিলেন ধীরগতিতে। অন্যপ্রান্তে দানুশকা গুনাথিলাকা মারমুখী থাকায় তিনি ছিলেন ‘নীরব’। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হাত খুলতে থাকেন কুশল মেন্ডিস। মোস্তাফিজুর রহমানের করা এক ওভারে টানা তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান।

বিধ্বংসী রূপে হাজির হওয়া কুশল তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরিও। তবে বেশিদূর যেতে পারেননি আর, ৫৩ রানেই তাকে থামান অভিষিক্ত আফিফ। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ২৭ বলের ইনিংসটিতে তিনি মেরেছেন ৮ চারের সঙ্গে ২ ছক্কা।

কুশলের আউটের পর আবার বাংলাদেশের আঘাত। নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়ে নাজমুল হোসেন প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান উপুল থারাঙ্গাকে। ওয়ান ডাউনে নেমে মোটেও সুবিধা করতে পারেননি এই ব্যাটসম্যান, নাজমুলের বলে মাত্র ৪ রান করে তালুবন্দী হন আফিফের হাতে।

এর আগে ওপেনার দানুশকা গুনাথিলাকার আউটে লঙ্কানরা হারায় প্রথম উইকেট।  ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে ‘বিগ শট’ খেলতে চেয়েছিলেন এই ব্যাটসম্যান, সুযোগ বুঝে তাকে স্টাম্পড করেন মুশফিকুর রহিম। ৩০ রানে এই ওপেনারের বিদায়ে মিরপুরের গ্যালারিতে উৎসব ছড়ালেও শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়েই ফিরতে হয়েছে তাদের। অভিষেকে ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট পাওয়া নাজমুল ইসলামের চেষ্টা গেছে বৃথা, কাজ হয়নি আফিফের (১/২৬) স্পিনও। সবাইকে ছাপিয়ে মিরপুরের প্রথম টি-টোয়েন্টির ‘নায়ক’ কুশল মেন্ডিসের হাতে উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার।