এই বিশ্বকাপে ধারাবাহিকভাবে ব্যাটে-বলে আলোকিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন সাকিব। প্রথম দুই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৫ ও ৬৪ রান করেছেন। এরপর ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ছিল ১২১ ও হার না মানা ১২৪ রানের ইনিংস। বল হাতেও দারুণ ইকোনমি রেট তার, উইকেট ৫টি। বাংলাদেশের দুটি জয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা।
সব মিলিয়ে টেলিগ্রাফের সাংবাদিক টিম উইগমোরের বিশ্লেষণে এখন পর্যন্ত সাকিবই সেরা খেলোয়াড়। তারা ঘোষণা করেছে, ‘শুধু একজনকে আপাতদৃষ্টিতে তার দেশের সেরা ব্যাটসম্যান ও সেরা বোলার হিসেবে দাবি করা যায়। তার নাম সাকিব আল হাসান, নিঃসন্দেহে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত তিনিই সবচেয়ে সেরা খেলোয়াড়।’
টেলিগ্রাফ আরও বলেছে, ‘সাকিবকে তার প্রাপ্য মূল্য না দেওয়ার একটা প্রবণতা আছে। এটা অদ্ভুত। ভক্তরা তার চমৎকার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ পারফরম্যান্স উপভোগ করে। আইসিসি খেলোয়াড় র্যাংকিংয়ে ২০১৫ সালে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটের সবকটিতে একই সঙ্গে শীর্ষস্থানে ছিলেন। কিন্তু সাকিবকে নিয়ে এই অবমূল্যায়ন একটা অন্তর্নিহিত সত্যি তুলে ধরেছে: তিনি এই খেলার কোনও ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাই তার বহুবিধ এই প্রতিভাকে অনেকে সহজে উপেক্ষা করে। এর একটা অন্যতম উদাহরণ হলো, ২০১১ সালের পর থেকে অস্ট্রেলিয়া কেবল একটি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশের সঙ্গে।’
টেলিগ্রাফ আরও যোগ করেছে, আত্মবিশ্বাস দিয়ে সাকিব ধারাবাহিকভাবে জ্বলে উঠলেও ২০১৪ সালে কোচের সঙ্গে দ্বিমত থাকায় বোর্ড ছয় মাস নিষিদ্ধ করে তাকে। কিন্তু এখন তিনি পরিণত এবং টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে ফিরে এসেছেন দারুণভাবে। টেলিগ্রাফ তাদের পর্যবেক্ষণে আরও বলেছে, ‘তার দলের সবচেয়ে কঠিন ভূমিকা নেন সাকিব। পাওয়ার প্লেতে নিয়মিত বল করেন এবং শেষদিকেও। আর ওয়ানডেতে তিন নম্বরে ব্যাটিং শুরু করে ১৯ ম্যাচ খেলে গড় রান ৫৯.৬৮-এর মধ্যে আছে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা সেঞ্চুরি।’
সংবাদমাধ্যমটি সবশেষে উল্লেখ করেছে, সাকিবের সাদামাটা উদযাপনের কথা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩২২ রানের কঠিন লক্ষ্য পার করে দেওয়ার পরও তার উদযাপন ছিল খুবই সহজ-সরল। দলকে জেতানোর পর ক্রিজের অন্য প্রান্তে থাকা লিটন দাসের সঙ্গে হাত মেলালেন। প্রত্যেক দলের বিপক্ষে নিজের সেরাটা দেওয়াই যে এখন তার ধ্যানজ্ঞান।