ছেলের খেলা দেখে আনন্দে কেঁদেছেন রাকিবুলের মা

বাবা-মায়ের সঙ্গে রাকিবুল‘অভাবের সংসারে নিজে লেখাপড়া করতে পারিনি, তাই ইচ্ছে ছিল ছেলেকে(রাকিবুল) বিসিএস ক্যাডার অফিসার বানিয়ে সংসারের অভাব দূর করবো। কিন্তু সে স্কুলের ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে খেলার মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলতো। ক্লাস ফাঁকি দেওয়ার জন্য ছোটবেলায় অনেক বকেছি, মারধরও করেছি।’ মোবাইল ফোনে কথাগুলো বলছিলেন যুব বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের অন্যতম খেলোয়াড় ময়মনসিংহের ফুলপুরের কুড়িপাড়া গ্রামের রাকিবুল হাসানের বাবা শহীদুল ইসলাম শহীদ।

অভাবের সংসারে কাজের টানে মাত্র ১০ বছর বয়সে ঢাকায় চলে যান শহীদ এবং ড্রাইভিং শেখেন। ভাড়ায় প্রাইভেটকার চালিয়ে খিলগাঁও এলাকায় ছোট বাসা নিয়ে রোমেলা বেগমকে বিয়ে করেন। এখন দুই পুত্র ও এক কন্যাকে নিয়ে শহীদ ও রোমেলার সংসার। বড় মেয়ে নীপা বর্তমানে ইডেন কলেজ থেকে অনার্স শেষ করেছেন। বড় ছেলে ওই ক্লাস ফাঁকি দেওয়া রাকিবুল হাসান! রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় শহীদুল ও তার পরিবার খুবই খুশি। শহীদের প্রত্যাশা, দ্রুতই তার ছেলে রাকিবুল জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়ে দেশের সুনাম ও মর্যাদা বাড়াবে।

রোববার রাকিবুল যখন মাঠে খেলছিলেন, তার মা রোমেলা বেগম তখন টিভিতে ছেলের খেলা দেখে চোখের জল মুছছেন, আনন্দে!

রাকিবুলের গ্রামের বাড়িরাকিবুলের কৃতিত্বে শুধু ফুলপুরের গ্রামের বাড়িই শুধু নয়, গোটা ময়মনসিংহে আনন্দের বন্যা বইছে। বিশেষ করে ময়মনসিংহের ক্রিকেটাঙ্গন খুবই আনন্দিত। রাকিবুলের গ্রামের বাড়ি ফুলপুরের কুড়িপাড়া গ্রামে তাদের পৈতৃক ভিটায় বিভিন্ন এলাকার মানুষ ছুটে আসছেন রাকিবুলকে দেখার জন্য এবং তার কথা শোনার জন্য। রাকিবুলের খালু কামাল হোসেন জানান, সোমবার সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকার মানুষ বাড়িতে ছুটে আসছে রাকিবুল কবে বাড়ি ফিরবে এটা জানার জন্য।

এদিকে ময়মনসিংহের ক্রিকেটপাড়ায় নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়েরা খুবই খুশি রাকিবুলকে নিয়ে। রাকিবুলের পথ ধরে তারাও ক্রিকেটকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চান।

ময়মনসিংহ ক্রিকেট একাডেমির কোচ আরিফুল ইসলাম রবিন জানান, মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেক হোসেনের পরে ময়মনসিংহের ছেলে রাকিবুল বিশ্বদরবারে সুনাম কুড়িয়েছে। তার এই অর্জন নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের করবে অনুপ্রাণিত!