৪৫ ক্রিকেটার নিয়ে বিকেএসপিতে ক্যাম্প

যুব বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। সাফল্য ধরে রাখতে সামনের প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি শুরু করতে চাইছে বিসিবিযুব বিশ্বকাপের আগে দল গোছাতে ও প্রস্তুত করতে বিসিবির ন্যাশনাল গেম ডেভেলপমেন্টে বিভাগ অনূর্ধ্ব-১৯ দল গঠন করতে সময় পায় ১৮ মাস। কিন্তু গত আসরের পর তিন মাস চলে গেলেও প্রাথমিক দলই তৈরি করতে পারেনি তারা! অথচ ২০২২ সালের শুরুর দিকে হবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) ঈদের পর থেকে ৪৫ ক্রিকেটারকে নিয়ে ক্যাম্প শুরু করতে চাচ্ছে বিসিবি। যদিও সবকিছু নির্ভর করছে বিকেএসপির ওপর।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এতদিনে পরবর্তী যুব বিশ্বকাপের জন্য দল গঠনের প্রস্তুতি শুরু করে দিতো বিসিবি। তবে আগস্টে দল গড়ার কাজে হাত দিতে চাইছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। ৪৫ ক্রিকেটারকে নিয়ে বিকেএসপিতে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার পরিকল্পনা বোর্ডের। ওই ক্যাম্প থেকেই ২৫-৩০ জনের প্রাথমিক দল বাছাই করবেন নির্বাচকরা।

দল নির্বাচন করা কতটা জরুরি হয়ে পড়েছে, সেটা বিসিবির ন্যাশনাল গেম ডেভেলপমেন্টের ম্যানেজার আবু ইমাম মো. কাওসারের কথাতেই স্পষ্ট, ‘আমরা সাধারণত প্রস্তুতির জন্য ১৮ মাস পাই। কিন্তু করনোর কারণে আমাদের তিন মাস চলে গেছে। এখনই বিকেএসপিতে ক্যাম্পটা শুরু করতে না পারলে দল গঠন বাধাগ্রস্ত হবে এবং ২০২২ সালের যুব বিশ্বকাপে যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়ার সম্ভব হবে না। আমরা আগামীবার চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে বিশ্বকাপ খেলতে যাব। আমাদের প্রস্তুতিটা ভালো হওয়ার খুবই জরুরি। এই প্রক্রিয়াটি যদি আমরা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি শেষ করতে পারি, তাহলে হয়তো প্রস্তুতি নিতে দেড় বছর সময় পাওয়া যাবে।’

ঈদের পর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু হবে। হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের (এইচপি) কার্যক্রমও শুরু হওয়ার কথা ১০ আগস্ট থেকে। এই দুটির সঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্যাম্প শুরু করাটা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়াতেই মূলত বিকেএসপিতে ভবিষ্যতের তামিম-সাকিব-মুশফিকদের নিয়ে পরিকল্পনা বিসিবির। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইডলাইন মেনে ৪৫ ক্রিকেটারকে নিয়ে তিন থেকে চার সপ্তাহের ক্যাম্প হবে।

এ প্রসঙ্গে কাওসার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘ঈদের পর মিরপুরে বেশ কিছু পোগ্রাম থাকবে। জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের গ্রুপ অনুশীলনের পাশাপাশি এইচপির ক্যাম্প হওয়ার কথা। আবার অনূর্ধ্ব-১৯-এর প্রস্তুতিও যদি করি তাহলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের জন্য বিকেএসপিই সেরা বিকল্প মনে হয়েছে। যেহেতু ওখানে বেশ কিছু মাঠ আছে, সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আছে।’

সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘বিকেএসপি আমাদের আগেও সবসময় সহযোগিতা করেছে। আশা করি এবারও তারা এগিয়ে আসবে ক্রিকেটের স্বার্থে। আমরা বিকেএসপিকে অফিসিয়ালি চিঠি দিয়েছি। যদিও এখনও উত্তর দেয়নি। আনুষ্ঠানিক জবাবের জন্য অপেক্ষা করছি। তবে আলাপ-আলোচনায় ইতিবাচক কথাই শুনেছি।’

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৬ আগস্ট থেকে চারদিন হোম অব ক্রিকেটে তরুণ ক্রিকেটারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। করোনা পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের বিকেএসপির ক্যাম্পে নেওয়ার পরিকল্পনা ২০ আগস্ট। পরদিন থেকে কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু। ফিটনেস ও স্কিল ট্রেনিং হবে তিন সপ্তাহ। এরপর নিজেদের মধ্যে কিছু ম্যাচ খেলার মাধ্যমে নির্বাচকরা ৪৫ জন থেকে ২৫-৩০ জনের দলে নামিয়ে আনবেন।

দল নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে কাওসারের বক্তব্য, ‘আমরা মূলত ইয়ুথ ক্রিকেট লিগের মাধ্যমেই অনূর্ধ্ব-১৯ দল গঠন করে থাকি। কিন্তু করোনার কারণে যেহেতু এবার প্রতিযোগিতাটি হয়নি, তাই আমরা ক্যাম্পের মাধ্যমেই দল নির্বাচন করবো।’

কীভাবে প্রাথমিক দল নির্বাচন করবেন, সেটাও জানালেন এই ম্যানেজার, ‘সাধারণত আমরা প্রাথমিক স্কোয়াডে ৩০ জনের বেশি রাখি না। কিন্তু এবার অন্যভাবে আমাদের স্কিলফুল খেলোয়াড় নির্বাচন করতে হচ্ছে, যার কারণে আমার ৪৫ জনকে ক্যাম্পে রাখবো। ক্যাম্পে ওদের স্কিল নিয়ে কাজ করে তৃতীয় কিংবা চতুর্থ সপ্তাহে কিছু ট্রায়াল ম্যাচ খেলে ওখান থেকেই হয়তো ২৫-৩০ জনের একটি দল গঠন করা হবে।’